1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Kanon Badsha : Kanon Badsha
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  4. [email protected] : News Editir : News Editir
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

১৫ ও ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা

  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

সেদিন বিকালে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের মূল নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে দেশের জন্য তা এক ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতো। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান ও গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এটা পরিষ্কার যে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল লক্ষ্য ছিল দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হত্যা করা।

জনসভাটি ২১ আগস্টে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার প্রতিবাদে। সভাটি আয়োজন করেছিল মহানগর আওয়ামী লীগ। প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ হাসিনা। তার বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে বোমা বিস্ফোরিত হতে থাকে। একটি ট্রাকের ওপর নির্মিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে জনগণের নেত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। এর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণের শেষ পর্যায়ে নেত্রী যখন জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে উঠছিলেন তখনই মঞ্চ সাজানো ট্রাক লক্ষ্য করে বিরামহীনভাবে বোমা হামলা চালানো হয়। বোমার শব্দে ঢাকা শহর কেঁপে উঠেছিল।

আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সময় নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে ঘিরে রেখেছিল। বোমা হামলা চলাকালে নেতাকর্মীরা নেত্রীকে গাড়িতে উঠিয়ে দেন। তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার পর পরই গাড়ি লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা ৬ রাউন্ড গুলি করে। দুটি গুলি লাগে পাশের গ্লাসে, তিনটি গুলি লাগে পেছনের গ্লাসে। বুলেটপ্রুফ গ্লাস হওয়ায় তা ভেদ করেনি। এতে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ১৩টি বোমাই ছোড়া হয়েছিল শেখ হাসিনার ট্রাক লক্ষ্য করে।

অমন একটি বিপজ্জনক মুহূর্তে তখনকার সরকারের প্রশাসন বৈরী আচরণ করেছিল আহত বিপন্ন মানুষের সঙ্গে। জনসভায় আসা হাজার হাজার লোক আত্মরক্ষার জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে। শত শত লোক রাস্তার মধ্যে পড়ে আর্তচিৎকার শুরু করে। কারও কারও নিথর দেহ ঘটনাস্থলে পড়েছিল। কেউ কেউ হাত-পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আর্তচিৎকার করে বাঁচার জন্য সাহায্য কামনা করে। শত শত নেতাকর্মীর এই ভয়াবহ অবস্থা দেখে পুরো এলাকার পরিবেশ পাল্টে যায়। এই দৃশ্য বর্ণনা করার মতো ছিল না। পুরো রাস্তায় রক্তের স্রোত বয়ে যায়।

এ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করার মতো কোনো পরিবেশও ছিল না। পরে রাস্তায় ওই অবস্থায় পড়ে থাকা শত শত লোককে উদ্ধার করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের বৈরী আচরণের ভেতর দিয়ে জোট সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছিল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ধ্বংস করার একটা ধারাবাহিক অপচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করে আসছি। তা না হলে ১৫ আগস্ট রাতে একই সঙ্গে তিনটি পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করার, নারী ও শিশুদের হত্যা করার প্রয়োজন হতো না। এরপর আবার জেলখানায় ঢুকে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হলো। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুরতা করা হয়েছে একটি দলের ও একটি পরিবারের ওপর।

দৈবক্রমে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সব নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। ২৪ জন নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন। আরও একবার প্রমাণ হলো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস।

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে যে চেষ্টাটির উদ্বোধন হয়েছিল ২১ আগস্টে সে প্রচেষ্টার দাঁড়ি টানার চেষ্টা হয়েছে। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কেবল বঙ্গবন্ধু-শূন্যই হয়নি, পরিণত হয়েছে জ্ঞানহীন, মেধাহীন, সংস্কৃতিহীন, স্বাধীনতাহীন একটি উদ্ভট শাসন ও শোষণের দেশে, যেখানে হাতে অস্ত্র থাকলে ক্ষমতা দখল করা যায়, ক্ষমতায় বসে রাষ্ট্রের টাকায় রাজনৈতিক দল খোলা যায় এবং নির্বাচনের নামে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়া যায় আর ধর্মকে ব্যবহার করা যায় যেমন ইচ্ছে তেমন। এরপর যদি ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে জেলের ভেতর নির্মম হত্যার শিকার হওয়া জাতীয় চার নেতার কথা বলেন, তাহলে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ সেদিন নেতৃত্বশূন্য হয়েছে এবং সেদিন জেলের ভেতর আসলে এ দেশের রাজনীতিকেই হত্যা করা হয়েছে।

এরপর যারা এদেশে রাজনীতি করেছে তাদের অধিকাংশই মূলত খর্বাকায়, অমানুষের দল। কিন্তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা রাজনীতিতে আসার পরই একটু একটু করে রাজনীতি আবার সাধারণ মানুষের কাছে ফিরে আসতে শুরু করে, মানুষ একটু হলেও নিজেকে ক্ষমতাবান ভাবতে শেখে। আর এটাই ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ওদের জন্য, যারা ২১ আগস্ট ঘটিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করে, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে রাজনীতিকে আবার ১৫ আগস্টের পরের জায়গায় নিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষের হাত থেকে রাজনীতি কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করেছিল।

১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় দুটি কালো অধ্যায় এবং এই কালো অধ্যায় দুটি এ দেশের রাজনীতির নিয়ামক। যতদিন অবধি না এদেশে ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের করা পাপের জন্য একটি পক্ষ নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবে, যতদিন না তারা উপলব্ধি করবে, এ দেশে রাজনীতি করতে হলে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে হবে, অবৈধ ও ষড়যন্ত্র করে কাউকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা আসলে গণতান্ত্রিক রাজনীতি হতে পারে না, ততদিন এ দেশের রাজনীতি আসলে মোটা দাগেই বিভক্ত থাকবে। তার মধ্যে সবচেয়ে কালো দাগ দুটি হবে ১৫ ও ২১ আগস্ট।

খাদিমুল বাশার জয়
সহ-সভাপতি
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews