1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Kanon Badsha : Kanon Badsha
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  4. [email protected] : News Editir : News Editir
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

অবরোধে ক্ষতির শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩

হরতাল-অবরোধ কিংবা রাজনৈতিক সহিংসতার কথা সামনে আসলেই ভয় ধরে ব্যবসায়ীদের মনে। মনে হচ্ছে সেই দিনের কথা, যদিও অনেক দিন হয়ে গেছে। কেউ কেউ হয়তো ভুলেও গেছে দেশের ইতিহাসে টানা অবরোধে কি পরিমাণ ব্যবসায়ীক ক্ষতি হয়েছিল। এ ধরণের আন্দোলনের কথা শুনলেই ভয়ের বোঝা চেপে বসে ব্যবসায়ীদের মাথায়। তাই বড় কোনো সংঘাত কিংবা দীর্ঘ মেয়াদী কোন কর্মসূচি যেন না হয় সেই প্রত্যাশা তাদের।

এদিকে নতুন বছরের শুরুতেই হরতাল আর অবরোধে বিপাকে পড়তে যাচ্ছে বড় কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর বিরোধি অবস্থানের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উৎপাদন ও পণ্যের পরিবহন। দীর্ঘ মেয়াদে এ অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবীদরা। তিন দিনের এই কর্মসূচি আরও দীর্ঘ হলে অর্থনৈতি সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে বলে শঙ্কা তাদের।

দেশের অর্থনৈতিক সংকট মুহূর্তেও গত ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলের মহাসমাবেশে সহিংসতাকে কেন্দ্র করে ২৯ অক্টোবর সকাল সন্ধা হরতাল ডেকেছিল বিএনপি ও জামায়াত। ফের আবার আগামী বিএনপি জামায়াত আগামী ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। এই অবরোধ কর্মসুচিতে বড় ধরণের ক্ষতির শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দোকানের আয় থেকে সংসার চলে। আমাদের বেচাকেনা না হলে না খেয়ে থাকতে হবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। জীবিকার তাগিদে পথে নেমেও অবরোধের কারণে প্রায় খালি হাতেই ঘরে ফিরতে হবে তাদের। রাজনৈতিক টানাপড়েনের জেরে পুঁজি হারানোর আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। এমন পরিস্থিতিতে দেশে কোন রকম হরতাল বা অবরোধ না হোক সেটাই প্রত্যাশা করছে ব্যবসায়ীরা।

গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা বলছেন, হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বিশেষ করে শিপমেন্ট জটিলতায় সময়মতো পণ্য না পেলে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে অর্ডার বাতিল করতে পারে বলে শঙ্কায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

‘দিন মজুর দিনে কাজ করে বাজার সদাই করে খাওয়ার জোগায়। কাজ বন্ধ থাকলে সেটা হবে কিভাবে ভেবেই হতাশ ও গভীর চিন্তায় পড়ে যেতে হয়। যত বড় কিংবা ছোট সহিংসতাই হোক না কেন দিন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। তাই এসব রাজনৈতি খেলা চায় না তারা। স্বাধীনভাবে দুই বেলা খাবারের আশায় যাদের দিন চলে তাদের কথা ভাববার কেউ নেই।’

নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, আমরা শঙ্কিত। সব সময় একটা ভয় কাজ করে। সপ্তাহের যে দিনগুলোতে কিছুটা বেচা বিক্রি হয় সেদিনগুলোতে অবরোধ। এখন অবরোধ হলে মানুষ যদি রাস্তায় বা মার্কেটে না আসে তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এভাবে চলতে পারে না। দেশের কথা চিন্তা করে হলেও এসব কর্মসুচি থেকে দুরে থাকা দরকার। দেশের মানুষও ভয়ে আছে কারণ রাস্তায় বের হতে চায় না ঝামেলায় পরে যাবে ভেবে। আমরা দোকান খোলা রাখবো তবে মানুষ আসবে কিনা সেটার উপর নির্ভর করবে আমাদের কেনা বেচা। নয়তো শুধু দোকান খুলে বসে থাকলে হবে না, যদি বেচা কেনা না হয়।

ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেকিল চৌধুরী বলেন, পর্যটন খাতে আমরা একেবারে শূন্যে কোঠায় এসেছি। হোটেল ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এগুলোর সাথে ব্যাংকিং খাত জড়িত। সেখানে অনেক কর্মসংস্থানও রয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতা না থাকলে প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ হতো।

অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সব ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দেখা পাওয়া যাবেনা।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই বিশ্বমন্দার কারণে সংকটের মধ্যে গার্মেন্টস শিল্প। রফতানি আয় ধরে রাখা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের জ্বালাও-পোড়াওয়ের আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মৌসুমের অর্ডার কমে যেতে পারে বলে শঙ্কায় তাদের।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দীর্ঘ বিরতি পর আবারও অস্থির দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। শুরু হয়ে গেছে বিরোধীদলের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি জ্বালাও-পোড়াও। বিরোধীদলের এই রাজনৈতিক সহিংসতায় শঙ্কিত দেশের ব্যবসায়ীরা।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের অর্থনীতির জন্য খুব ক্ষতিকর হবে। এমনিতেই পোশাক শিল্প প্রতিযোগিতায় জর্জরিত। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটলে বিষয়টি দুঃখজনক হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের অর্ডার বাড়াতে তৎপর ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়ার মতো প্রতিযোগী দেশগুলো। এ অবস্থায় দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ধস ঠেকাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান ব্যবসায়ীদের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews