1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

ধর্ষণ মামলায় জামিন পেয়েই বাল্যবিয়ে করলেন ছাত্রদল নেতা

  • আপডেট সময় সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক বরগুনা: সাবেক স্ত্রীর করা ধর্ষণ মামলায় জামিন পেয়ে তড়িঘড়ি করে বাল্যবিয়ে করেছেন মেহেদি হাসান সোহেল নামে বরগুনা জেলা ছাত্রদলের এক নেতা। গত বুধবার তিনি পাথরঘাটার কাকচিড়া ইউনিয়নের মাঝের চর বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠান করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
মেহেদি হাসান সোহেল জেলা ছাত্রদলের প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

তিনি বরগুনার পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কেজিস্কুল এলাকার বাসিন্দা বাদল মিয়ার (ব্যাংক বাদল) ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরের কেজিস্কুল সড়কের বাসিন্দা এক ব্যাংক কর্মকর্তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে কয়েক বছর প্রেম করার পর ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পরিবারের মতে ওই মেয়েকে বিয়ে করেন সোহেল।

কিন্তু মেয়ের পরিবার বিয়ে মেনে নেয়নি। সোহেলের সঙ্গে স্ত্রীর পারিবারিক নানা বিষয়ে নিয়ে মতানৈক্য ও বিরোধের কারণে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় একপর্যায়ে উভয় পরিবার ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর খোলা তালাকের মাধমে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।

বিচ্ছেদের পরও সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে থাকেন সোহেল। সোহেলের সঙ্গে ফের যোগাযোগ রাখায় ক্ষুদ্ধ হয়ে মেয়ের পরিবার মেয়েকে বাসা থেকে বের করে দিলে ওই মেয়ে শহরের ব্রাঞ্চ সড়কে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। এসময় সোহেল সাবেক স্ত্রীকে আবারো বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ সোহেল তার সাবেক স্ত্রীর ভাড়া বাসায় গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাত যাপন করেন। বিয়ে না করে পরের দিন সকালে সোহেল ওই বাসা থেকে বের হয়ে চলে যান এবং ফোনে জানান তিনি বিয়ে করবেন না। সোহেলের এমন প্রতারণার পর ৭ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে সোহেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন সাবেক স্ত্রী। আদালত ডিবি পুলিশকে মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদনের আদেশ দেন। ডিবির এসআই জাহিদুল ইসলাম কবির গত ৮ মে সোহেলকে অভিযুক্ত করে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেন। ১৪ জুন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে ভিক্টিমের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। জামিনে মুক্ত হওয়ার পরপরই তড়িঘড়ি করে বিয়ের আয়োজন করে সোহেলের পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই কাকচিড়া ইউনিয়নের বাইনচটকি এলাকার বাসিন্দা ও সিংড়াবুনিয়া দাখিল মাদরাসার ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়েকে বিয়ে করেন সোহেল। বিয়ের পরপরই স্ত্রীকে নিয়ে মাঝের চর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এবং ২ আগস্ট মাঝের চরে বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে পাথরঘাটা উপজেলা বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির দুজন সদস্য মাঝের চর যাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু মেয়ের বয়স প্রমাণের কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে ওই দুজন ফিরে যান।

কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু বিয়ের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়ে ১০ শ্রেণিতে পড়লেও বিয়ের আইনগত বয়স হয়েছে। তাই আমি নিজেও বিয়েতে উপস্থিত ছিলাম।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রনি বলেন, সোহেল প্রথম বিয়ে করেছিল কমিটি ঘোষণার পরে। সম্প্রতি সে আবারো বিয়ে করেছে শুনেছি। সে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয়। আর এ ধরনের ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের দায় সংগঠন নেবে না।

এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা সোহেলের সাবেক স্ত্রী মামলার বাদী বলেন, বিচ্ছেদের পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোহেল আমার সঙ্গে ভাড়া বাসায় রাত কাটিয়েছে। আমি তাকে বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু সে প্রতারণা করেছে এবং আমাকে বিয়ে করবে না এটা নিশ্চিত করতেই সে পুনরায় অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। এতে প্রমাণ হয় যে, সে পুনরায় মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আমার সঙ্গে সম্পর্ক করেছে। আমি সোহেলের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা সোহেলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে সোহেলের বাবা বাদল মিয়া বলেন- সোহেলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগে মামলা করেছে তার সাবেক স্ত্রী। ধর্ষণ মামলা অথচ আদালতে মেডিকেল রিপোর্ট না দেওয়ায় আদালত আমার ছেলেকে জামিন দিয়েছে। বাল্যবিয়ের কথা সত্য নয়, আমার বর্তমান পুত্রবধূর বয়স ১৮ বছরের বেশি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (ডিবি) জাহিদুল ইসলাম কবির বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামি সোহেলের বিরুদ্ধে বাদীর আনিত অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews