1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Kanon Badsha : Kanon Badsha
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  4. [email protected] : News Editir : News Editir
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
কায়েস আরজু-শিরিন শিলা “গবেট” আজ থেকে সড়ক বন্ধ করে বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে ফেসে যাচ্ছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, হারাতে পারেন চাকরি সালমান রাজের ‘বধুরে’ গানে হান্নান শাহ-এস কে মাহি সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবে সদস্যদের সাথে ঢাকার বার্তার চেয়ারম্যানের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হাসপাতালে ভর্তি অভিনেত্রী সেঁজুতি খন্দকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগী জাকির হোসেন’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩ অনুমতি ছাড়াই বিদেশে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘তুফান’ ফ্রান্সে সম্মাননা পেলেন তারকা দম্পতি অনন্ত-বর্ষা বিএনপি-আ.লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আজ

এডিসি হারুনকে বাঁচাতে তৎপর ছাত্রলীগ পুলিশের একাংশ

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আলোচিত-সমালোচিত ও সাময়িক বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদকে বাঁচাতে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগের একটি অংশ। তারা ইতোমধ্যে প্রভাবশালীদের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য নানা তদবির শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

সূত্র জানায়, গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে ৩৩তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি সানজিদা ও ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা এডিসি হারুনকে একসঙ্গে দেখতে পান সানজিদার স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ও বর্তমানে রাষ্ট্রপতির এপিএস হিসেবে নিযুক্ত আজিজুল হক। এ সময় আজিজুলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতা উপস্থিত ছিলেন। সানজিদার সঙ্গে হারুনের সম্পর্কের জের ধরে সেখানে গণ্ডগোল শুরু হয়। বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সেখান থেকে তিন পক্ষই চলে যায়। পরবর্তী সময়ে এডিসি হারুন শাহবাগ থানা পুলিশের মাধ্যমে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় তুলে নিয়ে যান। থানায় ওসির কক্ষে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের নেতৃত্বে  ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরে আহত আনোয়ার হোসেন নাঈমের কয়েকটি দাঁত পড়ে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নাঈমের বন্ধুরা জানিয়েছেন, নাঈমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার ঘাড়ে লাঠি দিয়ে পেটানোর কারণে টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাঈম এখনও ঘাড় নড়াতে পারছেন না। অন্য দুজন ঘটনার পরপরই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় গিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, আলোচিত এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এডিসি হারুনকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে রমনা বিভাগ থেকে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করেন। রবিবারই (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দফতরের এক  আদেশে এডিসি হারুনকে পিওএম থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়। এর একদিন পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।সর্বশেষ খবরে জানা যায়, এডিসি হারুনকে পুলিশের রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্তের পরপরই পুলিশ ও প্রশাসন ক্যাডারের মধ্যে বহুদিন ধরে চলে আসা অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টিও সামনে আসে। এরই মধ্যে পুলিশের একটি পক্ষ হারুনকে বাঁচাতে তৎপরতা শুরু করেছে। এডিসি হারুন আগে মারধরের শিকার হয়েছেন বলেও অনেকে সাফাই গাওয়া শুরু করেছে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় ডিএমপির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিএমপির উপ-কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তবে এর মধ্যে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) ও ডিআইজি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনের যে ঘটনাটি ঘটেছে তার সূত্রপাত হয় বারডেম হাসপাতালে। সেখানে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন আগেই বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুনের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। এই বিষয়টিও তদন্তে আসা উচিত।

যদিও পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্য মারধরের শিকার হলেও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এডিসি হারুন তিন ছাত্রলীগ নেতাকে যেভাবে থানায় এনে পিটিয়েছেন, সেটি ফৌজদারি অপরাধের শামিল। তিনি আগে মারধরের শিকার হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এর প্রতিকার চাইতে পারতেন। তা না করে তিনি আইনের মধ্যে না থেকে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তার জন্য পুরো বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ছাত্রলীগ নেতাকে দেখতে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারা দোষী বলা যাচ্ছে না। দুই জন অফিসারকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলে কার কতটুকু দোষ সেটা জানা যাবে।

পুলিশ ও ছাত্রলীগের সূত্র জানায়, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল রহমান সোহাগ তার বন্ধু। এজন্য ছাত্রলীগের একটি অংশও বিষয়টি আর ‘বড়’ না করে সমাধানের চেষ্টা করছে। এরইমধ্যে ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আলোচিত এই ঘটনায় ফৌজদারি মামলা করা হবে না বলে জানিয়েছেন। তারা কমিশনারের কাছে হারুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, পুলিশ ও ছাত্রলীগের একটি অংশ চাইছে— হারুনের যতটুকু শাস্তি হওয়ার তা হয়েছে। তাকে যেন চাকরিচ্যুত হতে না হয়, এজন্য তদবির শুরু করেছে। সাধারণত থানায় নিয়ে যে ধরনের ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন, তাতে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের চাকরি থেকে বহিষ্কার করার কথা। এজন্য তারা হারুনকে সঙ্গে নিয়ে প্রভাবশালীদের কাছে গিয়ে তদবির শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে  আরেকটি প্রজ্ঞাপনে এডিসি হারুনকে রংপুরের রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। যাতে হারুন সশরীরে প্রভাবশালীদের কাছে গিয়ে তদবির করতে না পারেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ‘পুলিশ হেফাজতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ নির্যাতন ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছে। কোনও ঘটনারই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে থাকা অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বেশি সাহসী হয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করছে। এডিসি হারুনই তার বড় প্রমাণ। তার বিরুদ্ধে আগের ঘটনাগুলোতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে, নতুন করে এই ঘটনার জন্ম হতো না।’

নূর খান লিটন বলেন, ‘এখন সরকারের ছাত্রসংগঠনের দুই নেতা নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিছুদিন পর হয়তো দেখা যাবে, তারা মিলেমিশে গিয়েছে। এডিসি হারুন আবার সগৌরবে আগের স্থানে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এতে পুরো বাহিনীর ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যায়। এজন্য দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews