1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  3. [email protected] : News Editir : News Editir
বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ পূর্বাহ্ন

র‍্যাবের ভূমিকায় পূনরায় কাজে ফিরলেন গার্মেন্টস কর্মীরা

  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩

মাসুদ রানাঃআশির দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় এবং দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সিংহ ভাগই আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাত থেকে। এ খাত শুধু দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অর্জনকেই সমৃদ্ধ করেনি, একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে প্রায় অর্ধকোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী।

সমাজের অনগ্রসর মহিলাদের কর্মসংস্থানের প্রধান ক্ষেত্রও হচ্ছে পোশাক শিল্প। শ্রমজীবী নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন পরিবারে তাদের অবস্থানের পরিবর্তন আনয়নে সক্ষম হয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা অর্জনের কারণে এসব নারী শ্রমিকের সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এ খাতটি দারিদ্রতা বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি তৈরি পোশাক শিল্প নারীর ক্ষমতায়ন, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন এবং বর্তমানে এসডিজি অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও পোশাক শিল্পের হাত ধরেই দেশের অর্থনীতিতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য।

কতিপয় দুস্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি পোশাক খাতকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে পোশাক শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ঐ সকল দুস্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টা প্রতিরোধ করে পোশাক খাতকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ পোশাক খাতকে উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সরকার কর্তৃক পোশাক শ্রমিকদের অধিকার সমুন্নত রাখতে ও সেগুলো আরও সুরক্ষিত রাখার জন্য ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে শ্রম আইন সংস্কার করা করা হয়েছে। সরকার পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মজুরি বোর্ড গঠন করেছে। এই বোর্ড পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক সংগঠন বিজেএমইএ (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টস এ্যাসোশিয়েশন) ও বিকেএমইএ (বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টস এ্যাসোশিয়েশন) পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি মজুরি কমিটি গঠন করেছে।

এই কমিটি নভেম্বর মাসের মধ্যেই পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঠিক করবে; যা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে। আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের বেতনের সাথে নতুন ঘোষিত মজুরি শ্রমিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। এছাড়াও শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিলও গঠন করা হয়েছে, যেখানে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এ তহবিল থেকে শ্রমিকদের চিকিৎসায়, তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাকবলিত শ্রমিক পরিবারকে নিয়মিতভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ হতে দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টসের পোশাক শ্রমিকরা তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় দুস্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল গত ৩১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রাজধানীর মিরপুরের একটি গার্মেন্টসে সংঘর্ষে জোসনা নামে এক পোশাক শ্রমিককে হত্যা করে লাশ গুম করার হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে রাজধানীর মিরপুরে পোশাক শ্রমিকরা আন্দোলন করার ফলে বিষয়টি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।

এপ্রেক্ষিতে গত ১ নভেম্বর ২০২৩ ইং রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ফোর্সেস রাজধানীর কালশী এলাকায় নিখোঁজ পোশক শ্রমিক জোসনা বেগমকে খুঁজে পায় এবং সে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে তার পরিবারের সাথে বসবাস করছিল। এছাড়াও যে সকল দুস্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের অপচেষ্টা রোধপূর্বক জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নজরদারী অব্যাহত রাখছে র‌্যাব ফোর্সেস। পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা কোন দুস্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহলের উস্কানী/মিথ্যা তথ্য/গুজব/প্রলোভনে পড়ে আন্দোলন, দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও কারখানায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরণের নাশকতামূলক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হবেন না।

দেশের বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্টস সেক্টরে চলমান সহিংসতা প্রতিরোধ ও শান্তিপ্রিয় পোশাক শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তারা যেন তাদের কর্মস্থলে নির্বিঘেœ কাজ করতে পারে তার জন্য র‌্যাব ফোর্সেসসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এপ্রেক্ষিতে র‍্যাব ফোর্সেস এর নিয়মিত টহল পরিচালনাসহ পুলিশ ও বিজিবির সাথে যৌথ টহল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোন দুস্কৃতিকারীরা যেন পোশাক শ্রমিকদের উস্কানী দিয়ে কোন ধরণের সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ গার্মেন্টসসমূহ চিহ্নিত করে ঐ এলাকার পোশাক শ্রমিকরা যেন নিরাপদে ও নির্বিঘে কাজ করতে পারে সে জন্য র‌্যাব ফোর্সেস এর টহল জোরদারসহ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

গার্মেন্টসে নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনার মূলপরিকল্পনাকারী এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলার আসামি ও জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছে র‌্যাব। এছাড়াও গার্মেন্টসে নাশকতা ও সহিংসতা সৃষ্টি করতে কেউ মদদ দিচ্ছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। গার্মেন্টসের বিভিন্ন সংগঠন বা শ্রমিক সংগঠনগুলো যারা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবী নিয়ে কাজ করছে র‌্যাব তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে। এছাড়াও গার্মেন্টস সেক্টরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে র‌্যাব ফোর্সেস কর্তৃক সময়ে সময়ে অবহিত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও যেন কোন দুস্কৃতিকারী ও সার্থান্বেষী মহল পোশাক শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে এ ধরণের নাশকতা ও সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য র‍্যাবের ফোর্সেস এর নজরদারী অব্যাহত থাকবে। ঘটনারস্থল রাজধানী ঢাকার মিরপুর ও সাভার, আশুলিয়া এবং গাজীপুরের কোনাবাড়ি, ভোগড়া, শফিপুর এলাকায় সহিংসতার ঘটনা সংঘঠিত হওয়া গার্মেন্টস সমূহ পরিদর্শন করেন র‍্যাবে ফোর্সেস এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স), অপারেশন্স উইং এর পরিচালক, লিগাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক সহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews