নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামুন আজিম নামে এক ব্যক্তিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। হাইকোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর গঠিত কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি আদেশে জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সত্রে জানা গেছে। বিএসইসি’র গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ খান। বিএসইসি’র জারি করা আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, মামুন আজিম এবং অন্যদের দ্বারা শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে অবৈধ, বেআইনি এবং অসৎ কাজের যে অভিযোগ উঠেছে তা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। অভিযুক্তরা শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ইনসাইডার ট্রেডিং এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক অনুযায়ী মামুন আজিম এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। গঠিত তদন্ত কমিটি ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয়সহ অন্যান্য অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। এ জন্য তদন্ত কমিটিতে বিএসইসি ও ডিএসইর কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো। তদন্ত কর্মকর্তারা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিএসইসিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল দেবেন। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক ব্যক্তিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেয়ারবাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং হলো- কোম্পানির কোনো অপ্রকাশিত বা গোপন ইতিবাচক বা নেতিবাচক আর্থিক তথ্য, যা প্রকাশ করার আগেই তার উপর ভিত্তি করে শেয়ার কেনাবেচা করা। বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং হয়ে থাকে। এটি বিশ্বাসযোগ্য দায়িত্বের সরাসরি লঙ্ঘন, যার মধ্যে শেয়ার ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে লাভবান হতে অভ্যন্তরীণ জ্ঞান ব্যবহার করে থাকেন। ইনসাইডার ট্রেডিংয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রথমে ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অবহিত করার বিধান রয়েছে। সেটি না করে প্রথমে ওই তথ্য কাজে লাগিয়ে নিজেদের নামে বা বেনামে শেয়ার কেনাবেচা করা হয়। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজারে গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করা, শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত দেখানোর ক্ষেত্রে ইনসাইডার ট্রেডিং বড় ভূমিকা রাখে। এটির মাধ্যমে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা হয়। সব শেয়ারবাজারেই সবচেয়ে বড় অপরাধ ইনসাইডার ট্রেডিং।