ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গত ১৭ জুলাই তারিখে ছিলো তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। কিন্তু দেশের পরিস্থিতির কারণে তখন পালন করা সম্ভব হয়নি। আজ রোববার তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যে কর্মসূচীর পালন করা হচ্ছে তারমধ্যে প্রথম দিন বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন ও কুরআন তেলাওয়াত করে কবর জিয়ারত করা। আগামীকাল এমাজউদ্দীন আহমদ স্বরণে একটি আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এমাজউদ্দিন আহমেদ স্যারের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ( ১৮ আগস্ট, ২০২৪’) রোববার, বিকেল চারটায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে,কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ ও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় । এমাজউদ্দিন স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে এই আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদারের নেতৃত্বে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, জোবায়ের বিন আতাউর, ইয়াসির আরাফাত, ইয়ামিন বাবু, ও ইকবাল হোসাইন, প্রমুখ। কুরআন তেলাওয়াত করে মোনাজাত করেন মাওলানা ইব্রাহিম খলিল।
এতে বক্তারা বলেন, অধ্যাপক ড, এমাজউদ্দীন আহমদ এর মতো আর সব শিক্ষক শিক্ষক নয় তাঁর মত আর সব বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি নয়। আকাল দিনের মধ্যে চলছে বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের পরিবর্তন ও পরিবেশ দেশের অবস্থা। এই সময়ে এমাজউদ্দীন আহমদ এর বড়ই প্রয়োজন ছিল দেশের ক্লান্তি লগ্নে।
মোহাম্মদ অলিদ তালুকদার বলেন, এমাজউদ্দীন আহমদের চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকীর সময় দেশে চলছিল আন্দোলন সংগ্রাম। যে সংগ্রামের কথাগুলো আজ থেকে পাঁচ বছর আগেই এমাজউদ্দীন আহমদ বলে গেছেন। তিনি অসংখ্য সভা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করে আলোচনায় দিকনির্দেশনা মুলক তার বক্তব্যের মাধ্যমে কথাগুলো বলে গেছেনু। তিনি আজ নেই। কিন্তু তার সেই সব কথাগুলো আজ অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলন ঘটেছে বাংলাদেশের মধ্যে।
মোহাম্মদ অলিদ তালুকদার আরো বলেন, আমি এমাজউদ্দীন আহমদ স্যারের সঙ্গে চলার পথে জীবনবর যে সমস্ত বিষয়গুলো নিজ চোখে দেখেছি, তাতে বলতে হয় এমন কোন লোক নেই যিনি এমাজউদ্দীন আহমদ স্যারের কাছে গিয়েছেন আর উপকার পাননি। অনেক লেখক, সাংবাদিক, রাজনীতিবীদ, শিক্ষক, অধ্যাপক, ডাক্তার, ও বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত লোকজন এমাজউদ্দীন আহমদ কে নামে বেনামে ব্যবহার করে গেছে তাদের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করবার জন্য। এতে পরিত্রাপের বিষয় টি হচ্ছে এমাজউদ্দীন আহমদ মৃত্যুর পর থেকে বর্তমান চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিক চলমান এই চারটি বছরের মধ্যে এই সমস্ত সুযোগ সন্ধানী স্বার্থপর বেঈমান, চাটুকারগংদের কে একটি বারের মতো দেখা যায়নি এমাজউদ্দীন কে স্বরণ করতে৷ বা তার কবর জিয়ারত করে দোয়া করতে।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে অনেক অন্যায় ভুল অসংগতি দেখেও আমরা চুপ হয়ে থাকি, না হয় এড়িয়ে চলি। আপস করার নামে আত্মপ্রবঞ্চনার দহনেও কেউ কেউ দগ্ধ হই। আর কেউ কেউ যেখানেই সুযোগ, যেখানেই সুবিধা, সেখানেই হুজুর, জাহাঁপনা বলে তেলের নহর বইয়ে দিই। বিবেকের দরজা তালাবদ্ধ করে সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণি হিসেবে আমরা অনেকে উচ্ছিষ্ট কুড়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সব লাজলজ্জা বেমালুম ভুলে পেশাদারিত্বের জায়গায় নীতি ও আদর্শবোধ পরিহার করে ক্ষমতার করুণাশ্রিত জীবনে মানবিক গুণাবলি নিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে ত্যাগের মহিমায় নিরলস কাজ করার মধ্য দিয়ে সুখ আহরণের শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। বিপদগ্রস্ত মানুষের আশ্রয়ের জায়গা হলো ডাক্তার, পুলিশ ও উকিল। ডাক্তার হলো তার জীবন রক্ষার নির্ভরতা। পরমভক্তি ও আদর ডাক্তারদের প্রতি মানুষের। এটা রক্ষা করাও তাদের পবিত্র দায়িত্ব। সবাই তাই করেনও। কিন্তু নির্দয় লোভী, দাম্ভিক দায়িত্বহীন কেউ কেউ এই ইমেজের সর্বনাশ করেন।
মোহাম্মদ অলিদ তালুকদার বলেন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও এমাজউদ্দীন আহমদ ও সিনিয়র সাংবাদিক মরহুম মাহফুজ উল্লাহ তাদের উভয়ের তৎকালীন সময়ের আন্দোলনের ফসল হিসেবে মনে করি।
Leave a Reply