নিজস্ব প্রতিবেদক :বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধুবী রায় ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুজর মোঃ ইজাজুল কে মৌখিকভাবে অনেকবার পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানানো হলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দেখার দায়িত্ব কার? এমনটাই প্রশ্ন পথচারীদের।
বাকেরগঞ্জ সদররোডে চলছে ৭ম তলা মার্কেট নির্মাণ। কিন্তু পথচারীদের জন্য নেই কোনো নিরাপত্তা। ভবন থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে মানুষের প্রাণ যেতে পারে। নেই কোনো উদ্যোগ। নামেমাত্র নিরাপত্তার জাল দিয়ে চলছে বহুতল এই ভবনের নির্মাণকাজ। এই ভবনের সামনে রয়েছে বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় সেখানে সন্ধ্যার পরে শত শত লোক জমা হয়। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ভবন নির্মাণের চারপাশ জাল দিয়ে ঢেকে ও নিরাপত্তা-মাচা তৈরি করে বহুতল ভবন নির্মাণের বিধান রয়েছে। কিন্তু নামেমাত্র অল্প জায়গায় জাল দিয়েছে যা দ্বারা নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব নয়। তবে এই নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের মালিকপক্ষ বা নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান তা মানছে না। ফলে নির্মাণাধীন ভবন পথচারীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে পথচারীর মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। পত্রপত্রিকায় খবর ছাপা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রায়ই ভবনের ওপর থেকে ইট, কাঠ, পাথর, রড, বাঁশ, যন্ত্রপাতি, পাইপসহ নির্মাণসামগ্রী পড়ে। আহত হওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার প্রধান শিকার পথচারী। নির্মাণাধীন ভবনের নিচ দিয়ে যাতায়াত করা বা পার্ক করা যানবাহনেরও ক্ষতি হচ্ছে।
বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় কেউ মাচা দেয় তো জাল দেয় না, জাল দিলে মাচা দেয় না। ফলে ভবনগুলো জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। নির্মাণসামগ্রী পড়ে পথচারীর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। যদিও এই মৃত্যুগুলো অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা (বিএনবিসি) অনুসারে, নির্মাণাধীন ভবনের চারপাশ নাইলনের জাল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। নির্মাণসামগ্রী যেন পড়ে না যায়, সে জন্য বাইরের দেয়ালে নিরাপত্তামূলক মাচা (কেনোপি) রাখতে হবে। এ মাচা থাকবে নির্মাণকাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। এ ছাড়া ভবনের চারপাশে নোটিশ বোর্ডে পর্যাপ্ত বিপদের চিহ্ন অথবা রঙিন আলো দিয়ে বিপদ চেনার ব্যবস্থা করতে হবে। বিধি অনুসারে, নিরাপত্তার এসব ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে ভবনের মালিক বা নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু এই নির্মাণস্থলে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়নি ভবনের মালিক বা নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান।
গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎ ওপর থেকে ইটের একটা টুকরা পড়ে মাথা ফাইটা প্রচুর রক্ত পড়েছে একজন ব্যাক্তির। ভবনের একপাশে নামেমাত্র নিরাপত্তা জাল দেওয়া। ফলে ওপর থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে যেকোনো সময় বাইরে ছিটকে পড়তে পারে।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
আরেকজন পথচারী বলেন, সব সময় ওপরের দিকে তাকিয়ে হাঁটা সম্ভব না। ওপর থেকে যাতে নির্মাণসামগ্রী না পড়ে, সে দায়িত্ব নির্মাণকারীদের। এবং তদারকি করার কথা উপজেলা প্রশাসনের কিন্তু বাস্তব অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কোনো তদারক করে বলে মনে হয় না।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মোবাইল নাম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।