ছেলে মাহবুবকে নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে ফিরছিলেন বগুড়ার ভাটাহার গ্রামের মঞ্জুয়ারা বেগম। বগুড়া রেলস্টেশনে পৌঁছে ছেলেকে বাড়ি যাওয়ার বাসে তুলে দিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন চলন্ত ট্রেনের নিচে।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে বগুড়া রেল স্টেশন এলাকায় আত্মহত্যার এমন ঘটনায় হতভম্ব হয়ে গেছেন এলাকাবাসী।
রেলওয়ে বগুড়া ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিকেল ৪টার দিকে বগুড়া রেল স্টেশনের অদূরে তিন মাথা এলাকায় এক মহিলা রংপুর এক্সপ্রেস টেনে আত্মহত্যা করেছে এমন খবর পাই। পরে ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আত্মহত্যার আগে ওই মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ পাশে পড়ে ছিল। সেখানে একটি কাগজে নাম পরিচয় লেখা ছিল। সে অনুযায়ী বাড়ীতে খবর দেওয়া হলে ছেলে ও স্বামী এসে লাশ শনাক্ত করেন।
মোস্তাফিজার রহমান জানান, নিহত নারীর নাম মঞ্জুয়ারা বেগম (৩০)।তিনি বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার ভাটাহার গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।
শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে বারো বছর বয়সের ছেলেকে বাড়ী যেতে বাসে তুলে দেন মঞ্জুয়ারা বেগম (৩০)। এর পর বিকেলে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মায়ের মৃত দেহ দেখে ছেলে মাহবুব হোসেন মায়ের জন্য রেল স্টেশনে বসে কাঁদছেন। এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বগুড়া রেল স্টেশন এলাকায়। মঞ্জুয়ারা বেগম বিকেল চারটার দিকে ঢাকা থেকে রংপুরগামী চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মঞ্জুয়ারার স্বামী জসিম উদ্দিন জানান, ১৫ দিন আগে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মাহবুবকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্জুয়ারা বেগম গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান।
শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে তিনি বগুড়া ফিরে আসেন। মঞ্জুয়ারা বগুড়া শহরের রেল স্টেশন এলাকায় পৌঁছনোর পর ছেলেকে দুঁপচাচিয়াগামী একটি বাসে তুলে দেন। সেসময় তিনি জানান, একটি কাজ শেষ করে তিনি বিকালে বাড়ি ফিরে যাবেন। মায়ের কথামতো ছেলে মাহবুব বাড়ি চলে যান।
পরে বিকালে লোকমুখে খবর পেয়ে জসিম উদ্দিন তার ছেলেকে নিয়ে বগুড়া রেল স্টেশনের পাশে গিয়ে মঞ্জুয়ারা বেগমের ট্রেনে কাটা লাশ দেখতে পান। লাশ উদ্ধারের পর ছেলে মাহবুবের আহাজারিতে রেলস্টেশনের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি শ্বশুরের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা পেতাম। মঞ্জুয়ারা সে টাকাই আনতে গিয়েছিল। আমার গরীব শ্বশুর সেই টাকা দিতে পারেননি। টাকা আনতে না পারার কারণে সে আত্মহত্যা করেছে কি না আমি নিশ্চিৎ নই। তবে ওই টাকার জন্য আমি কখনও স্ত্রীকে জোর করিনি।’