গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জেব্রা, বাঘ ও সিংহের পর এবার আফ্রিকান প্রাণী লেমুর মারা গেছে। মারা যাওয়া লেমুরটি ছিল মাদী।
রোববার লেমুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম।
পার্কের ওই কর্মকর্তা জানান, গত শুক্রবার বিকেলে লেমুরটিকে বেস্টনীতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে লেমুরটি হৃদরোগে (হার্ট অ্যাটাকে) আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। মৃত লেমুরটি ছিল মাদী। পার্কে মোট চারটি লেমুর ছিল। একটি মাদী লেমুর মারা যাওয়ায় বর্তমানে পার্কে তিনটি লেমুর রয়েছে। সেগুলো সুস্থ্য আছে। মৃত লেমুরটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে শুক্রবার বিকেলে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, লেমুর রাতের আঁধারে অপেক্ষাকৃত বেশি চলাচল করে। এরা সাধারণতঃ পতঙ্গ, ফল, লতা, পাতা খেয়ে থাকে। তারা দলবদ্ধভাবে বাস করে। একটি দলে ১৫টির বেশি লেমুর থাকতে পারে। শরীরের গন্ধ ও বিশেষ ধরনের শব্দের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে। ছোট লেমুরের ওজন ১ পাউন্ড হয়ে থাকে। প্রাপ্ত লেমুরের ওজন সর্বোচ্চ ১৫ পাউন্ড হতে পারে। লেমুর শব্দের অর্থ ভুত। একারনেই এ প্রাণীটির নামকরণ করা হয় লেমুর। রাতের বেলায় লেমুরের চোখে আলো ফেললে ভুতের মতো দেখায়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬আগস্ট রাতে পাচার কালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ম্যাকাও, ময়ুর, লেমুরসহ ২০২ জোড়া বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ ও ঢাকা কাস্টমস্ হাউস কর্তৃপক্ষ। পরে সেগুলো বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট উদ্ধার হওয়া পাখি ও প্রাণীগুলোকে ওই বছরের ৭ আগস্ট সকালে গাজীপুরের সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে। একই বছর উদ্ধার হওয়া লেমুর দেশে প্রথম বারের মতো সাফারী পার্কে বাচ্চার জন্ম দিয়েছিল।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২৭ দিনের ব্যবধানে গাজীপুরের এ পার্কে ১১টি জেব্রা, একটি বাঘ ও একটি সিংহী মারা যায়।