এম এ আউয়াল :নোয়াখালীর সেনবাগের কানকিরহাটে এক কলেজ ছাত্রী (১৯) ধর্ষিত হয়েছে।৪ বছরের সম্পর্ককে পুজিকরে কানকিরহাট বাজারের সেলুন কর্মচারী সাগর চন্দ্রদাস (২৫)এর লালসার শিকার হয়েছে মুসলিম ওই কলেজ ছাত্রী (১৯)। ভিকটিম কানকিরহাট কলেজ থেকে সদ্যঘোষিত ফলাফলে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে।সেলুন কর্মচারী সাগর চন্দ্রদাস কেশারপাড় ইউপির বীরকোট মালী বাড়ীর দুলাল চন্দ্রদাসের বখাটে পুত্র।কলেজ ছাত্রী একই ইউপির লুদুয়া গ্রামের মৃত মোকছেদুর রহমানের কন্যা। গতকাল রোববার রাতে কেশারপাড় গ্রামের একটি বাড়ী থেকে পালিয়ে যাবার সময় স্হানীয় লোকজন দুইজনকে আটক করে সেনবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
৫ দিন আগে (২২ ফেব্রুয়ারী) কলেজ ছাত্রীর সাথে বীরকোটের মৃত রবিউলের পুত্র আনোয়ারের সাথে বিয়ে হয়েছিলো।ভিকটিম বাসর ঘর থেকে পালিয়ে নিজ বাড়ীতে চলে আসে। অমুসলিম প্রেমিকের সাথে নববধুর গভীর সম্পর্কের ঘটনায় বর আনোয়ার সহ পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গতকাল রোববার দুপুরে সাগরের প্ররোচনায় ভিকটিম লুদুয়া গ্রাম থেকে কেশারপাড়ে তার ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ীতে উঠে। সন্ধ্যায় প্রেমিক প্রেমিকা পালিয়ে যাবার সময় স্হানীয় লোকজন তাদের কে আটক করে।রাত ৮ টায় ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল ভূঞা সহ গণ্যমান্য লোকজন প্রেমিক প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি অবহিত হন। বখাটে সাগর মুসলিম প্রেমিকাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় দুইজনকে সেনবাগ থানা পুলিশে হস্তান্তর করেন।
রাতে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো: নাজমুল হাসান রাজিব সেনবাগ থানায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে একাধিকবার ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেছেন প্রেমিকা সাগর।
দৈনিক মানবজমিনকে ভিকটিম কলেজ ছাত্রী জানান, কানকিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেনীতে পড়াকালীন সাগরের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সাগর বিভিন্নস্হানে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করতো।ভিকটিমের চাচাতো ভাই সোহেল (১৮) ও ডমুরুয়া ইউপির নলুয়া গ্রামের পারভেজ(২৫) নামে দুই যুবকের সহায়তায় সাগর হিংস্র হয়ে গেটটুগেদার করতো।স্হানীয় আরএস টাওয়ারের মধুমেলা, বীরকোট মালী বাড়ী,সোনাইমুড়ী, চৌমুহনী ও ফেনীর বিভিন্ন স্পট সহ সাগরের আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে নিয়ে যেত স্ত্রী পরিচয়ে।আটকের পর সাগর হিন্দু ধর্মের ধোহাই দিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়নি।সাগরের প্ররোচনায় নতুন সংসার ছেড়ে ঘরবাঁধতে ছেয়েছিলাম। বখাটে সাগর মুসলিম হয়ে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। আমি অন্ধ হয়ে তার ডাকে সাড়া দিয়েছি।সে আমার স্বপ্ন ভঙ্গ করে আমার সব লুটেছে।বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।আমি তার বিচার চাই।
থানা হাজতে সাগর ভিকটিমের সাথে অন্তরঙ্গমুহুর্ত সহ লিভটুগেদারে গিয়ে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলেও বিয়েতে রাজি হয়নি।
ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ৩ জন কে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা (নং২২ তারিখ: ২৮/২/২২ ইং)দায়ের করেছেন ।
ভিকটিমের ভাই আবদুস সাত্তার পরিবারের অমতে অমুসলিম বখাটের প্রলোভনে বোনের সর্বস্ব হারানোয় বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ।
সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মানবজমিনকে জানান,সোমবার দুপুরে আসামী সাগরকে নোয়াখালীর বিজ্ঞ আদালতে পাঠনো হয়েছে। মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভিকটিম কে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।শ্রীর্ঘই অপর ২ আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্হানীয় লোকজন জানান,কানকিরহাট বাজার সহ সেনবাগের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বখাটে কিশোরগ্যাং মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে।স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আসা যাবার সময় অনেক শিক্ষার্থী ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে।প্রতিটি বাজার ও প্রতিষ্ঠানের সামনে বাহিরে সিসিক্যামেরা লাগানো ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম থাকলে অনেকাংশে অপরাধ কমে আসবে।