1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Khan Md Mahadi : Khan Md Mahadi
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে যে স্কুল ও কলেজ

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

জিয়াউল হক, বাকেরগঞ্জ বরিশাল:- বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণ জনপদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজটি এখন সকলের কাছেই সুপরিচিত। বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠি গ্রামে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজটির অবস্থান। উপজেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে পেয়ারপুর গোমা সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে আব্দুর রশিদ মোল্লা জাহিমা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা কলেজ। প্রতিবছরই ভালো ফলাফলে উপজেলা জুড়ে সুনাম আর সুখ্যাতি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজটিতে যেতে চোখে পড়ে গ্রামীন আঁকাবাঁকা মেঠোপথ। মাঠের পর মাঠ। সড়কের দুই পাশে ধান ক্ষেত আর সবুজ দুনিয়া। সড়কের দু’পাশই ছায়াবৃক্ষের রাজত্ব।

দুধল ইউনিয়নের চারিদিকে নদী বেষ্টিত জেলে আর কৃষিজীবী খেটে খাওয়া মানুষ প্রতিদিনই জীবন যুদ্ধে লড়ে। জেলেরা নদীতে মাছ ধরে আর কৃষকরা মাঠে মাটির সঙ্গে লড়ে সোনা ফলায়। তাদের শ্রমে-ঘামে চলে জীবন সংসার। এক সময়ে অভাব-অনটন আর টানাপোড়া ছিল তাদের প্রতিদিনের জীবনসঙ্গী। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলাচ্ছে তাদের আশপাশ। পরিবর্তন আসছে সর্বত্রই। কৃষি ও শ্রমজীবী গ্রামীণ ওই জনপদের মানুষগুলো তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ আর জীবন- জীবিকা নিয়ে ভাবে। এই ভাবনার শেষ নেই। বর্তমান সময়ে সব কিছুতে একটি পরিবর্তন এসেছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা যেন পিছিয়ে নেই। তাই তারা তাদের সন্তানদের দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বর্তমান সময়ের সাথে তারা পড়ালেখায় উচ্চ শিক্ষা না নিলেও সন্তানদের এমন প্রয়োজনীয়তা খুব ভালো করে বুঝেন।

আর সেই কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষদের চিন্তার অবসান ঘটাতে আগ্রহী হন ওই এলাকারই সু-সন্তান বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষানুরাগী জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা। তিনি নিজ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা চিন্তা করে। এলাকার অসহায় সুবিধা বঞ্চিত সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ করে দিতে উদ্যোগী হন। ২০০০ সালে তার পিতা, মাতার নামে নিজ অর্থায়নে দের একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন আব্দুর রশিদ মোল্লা জাহিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। যে বিদ্যালয়টিতে এখন ৩০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৫ জন রয়েছেন শিক্ষক।

তাদের ইউনিয়নে কোনো গ্রামেই নেই উচ্চ শিক্ষা অর্জনের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যা আছে তা শহরে। কিন্তু শহরের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত আর পড়ালেখার খরচ কুলিয়ে সকলের গন্তব্যে পৌঁছানোর সাধ্য কোথায়? সারা দিন নদী নালায় আর মাঠেঘাটে কাজ করে দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা যাদের নেই তাদের সন্তান শহরে গিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তা যেন দুঃস্বপ্ন। তাই নিজ এলাকায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় ২০১৩ সালে ১ একর ৩৬ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন বহু তলা ভবনের জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা কলেজ। কলেজটির প্রবেশ পথে দুই পাশে ফুলের বাগান। মূল গেটের পাশে কলেজ ক্যান্টিন। প্রাচীরে রয়েছে জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি অংকন করা সহ তাদের লেখা বিভিন্ন প্রবাদ বাক্য। মনমুগ্ধকর পরিবেশে গড়ে ওঠা কলেজটি এখন জেলার অন্যতম কলেজ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কলেজটির একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী রয়েছেন ২০৩ জন। দ্বাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৯৭ জন। ১৮ জন শিক্ষকের তদারকিতে পরীক্ষায় পাশের হারে উপজেলায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে।

তাদের এখন শতভাগ শতাংশের ফলাফলে অভিভূত এই দুধল ইউনিয়নে অভিভাবক ও সচেতন সমাজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে এগিয়ে চলছে। শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ালেখার সু-ব্যবস্থা, রয়েছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী। যাতায়াতের জন্য শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে দেয়া হয়েছে বাইসাইকেল। শিক্ষার্থীদের ফ্রি চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক নানা সুযোগ-সুবিধা। সু-প্রশস্ত কম্পিউটার ল্যাব, বিশাল ক্যাম্পাস, পরিচ্ছন্ন ক্লাসরুম আর খেলাধুলার সু-ব্যবস্থা। রাজনীতিমুক্ত ও ধূমপানমুক্ত নির্মল পরিবেশে চমৎকার ক্যাম্পাস শুরু থেকেই দৃষ্টি কাড়ছে সকলের। এখন কলেজটি ওই এলাকার অন্ধকার দূর করে আলোর বার্তা নিয়ে এসেছে। এখন দিন যত যাচ্ছে কলেজটি তার শিক্ষার আলো ততই ছড়াচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ গৌর চন্দ্র মন্ডল বলেন, দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে কলেজটিকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে এত বিশাল ব্যয় বহন করছেন শিক্ষা অনুরাগী জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা নিজ এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে। শুধু এই কলেজ নয়, নিজ এলাকাকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে তারা প্রতিষ্ঠা করেছেন আরো একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে এখানে অধ্যয়ন করে উচ্চ শিক্ষিত হচ্ছেন। কলেজটি এগিয়ে নিতে তিনি শিক্ষাবান্ধব এ সরকারসহ সকলের সহযোগিতা চান। কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের সরকারের কাছে জোর দাবি কলেজটি এমপিভুক্ত করার।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews