এফডিসিকে মনে করা হয় সিনেমার প্রাণকেন্দ্র। এক সময় ছবির চোখজুড়ানো দৃশ্য ধারণ করা হতো সেখানে। চলচ্চিত্রশিল্পীদের প্রিয় এফডিসি এখন আর আগের মতো নেই। শুটিং নেই তেমন, নেই প্রথম সারির তারকাদের যাতায়াত। সেখানে এখন বেশি চলে সমিতি- চর্চা। চলচ্চিত্রভিত্তিক একাধিক সমিতির অফিস এখানে। এটাকে দখলদারিত্ব বলে মনে করেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জ্যোতি লিখেছেন, ‘অনেকেই হয়তো জানেন না, বিএফডিসি সম্পূর্ণভাবে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের উন্নয়ন এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য। আর এর ভেতরে যে সংগঠনগুলো আছে যেমন পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতি, শিল্পী সমিতি এগুলো প্রত্যেকটা বেসরকারি সংগঠন। এফডিসিতে জায়গা দখল করে আছে বলতে পারেন। সরকার নোটিস দিলে আজই জায়গা ছাড়তে বাধ্য কিংবা সরকার চাইলে তাদের কাছ থেকে ভাড়াও নিতে পারে।কিন্তু সরকার কেন এদিকে নজর না দিয়ে এফডিসির ভেতর মারামারি, টুকাটুকি, পিকনিক, নির্বাচন, গরু জবাই ইত্যাদি অ্যালাউ করে জানি না।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমি একদিন দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অফিসারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বললেন, এভাবে কেউ ভাবেনি; এখন চাইলেই উঠানো যাবে না যেহেতু অনেক বছর ধরে তারা এখানে রয়েছে। তবে তিনি বিষয়টা ভাববেন। তারপর জিজ্ঞেস করেছিলাম- তাহলে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রযোজক সমিতির মেম্বার না হলে ছবি রিলিজ করা যায়না কেন? উনি একটু আমতা আমতা করে বললেন, প্রযোজক সমিতির মেম্বার হলে আমরা মনে করি যে তার একটা ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ড আছে, এই আর কি। তবে তারা এগুলো দেখবেন।’
এরপর জ্যোতিকা জ্যোতি লিখেন, ‘সরকার কিন্তু দিতে প্রস্তুত। চাইতে হবে আমাদেরই। আপনারা যারা সারাদিন মন্ত্রণালয়ে ঘুরে, সচিব-মন্ত্রীকে নানান মন্ত্রণা দিয়ে শুধু নিজের কাজটা বাগিয়ে এনে ইন্ডাস্ট্র্রির ধ্বংস করছেন, আর কত করবেন! সমষ্টিগত লাভের কথা ভাবেন, তাহলেই কেবল আপনি টিকে থাকতে পারবেন।কাজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রযোজনা কিংবা অভিনয় কোনোটার জন্যই এই সংগঠনগুলো আবশ্যিক না। এফডিসির ডিরেক্টর, এফডিসির আর্টিস্ট বলে আমরা যে টিপ্পনী মারি তাতে আসলে এফডিসিকেই ছোট করা হয়। তাদের সাথে এফডিসির কোন সম্পর্ক নেই। আঁতেল শ্রেণী আর সস্তা শ্রেণী বাদাবাদি করে যাচ্ছে, মাঝখানে এফডিসি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে! দয়া করে এফডিসিকে কাজে লাগান, যোগ্য লোকেরা এগিয়ে যান, এফডিসির অসাধারণ সব টেকনিক্যাল সুবিধা সকলে মিলে ভোগ করেন, সিন্ডিকেট ধ্বংস করেন। এফডিসি সরকারি প্রতিষ্ঠান, এবং সেটা আমার, আপনার সকলের।’