এম এ আউয়াল:নোয়াখালীর সেনবাগে তৃতীয় লিঙ্গের চুমকি (২৬) অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় থানা পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
গতকাল দুপুরে উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নিজসেনবাগ গ্রামের রেজ্জাক পুলিশের বাড়ী থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন মজিবুল হকের পুত্র জহিরুল ইসলাম নয়ন (২৮) আয়েশা বেগম (২৮) ও বিবি রহিমা (৩২)।
গতকাল বিকেল ৪ টায় সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন জানান,গত শুক্রবার ১১ই মার্চ দুপুর ২টার সময় জহিরুল ইসলাম নয়নের একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। তখন তারা পারিপারিকভাবে আগামী ২০শে মার্চ দুপুরে নবজাতকের নাম রাখা ও আকদ অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারন করেন। পরবর্তীতে এ সংবাদটি হিজড়ারা জেনে যায়। গতবুধবার ১৬ মার্চ দুপুর পৌনে ২ টার সময় তৃতীয় লিঙ্গের চুমকি (২৬) ও সোহাগী (২৮) ওই বাড়ীতে গিয়ে বাড়ীর মহিলাদের নিকট ৫ হাজার টাকা দাবী করে। এ সময় নবজাতকের ফুফু আয়েশা (২৬) হিজড়াদেরকে নগদ ৪ শত টাকা দেয়। কিন্তু তারা এত অল্প টাকায় সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের দাবীকৃত টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখে এবং বিচ্ছৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে হিজড়া চুমকি তার সাথে থাকা ব্যাগ হতে একটি বোতল বের করে বোতলটি ভেঙ্গে নিজের শরীরে আঘাত করবে মর্মে মহিলাদেরকে ভয়ভীতি দেখায়। তারপরও বাড়ীর মহিলারা টাকা না দেয়ায় ভিকটিম চুমকি ঐ বাড়ীর ঘরের সিঁড়িতে থাকা কুপি বাতি হতে কেরোসিন তৈল নিয়ে নিজের গায়ে মেখে ঘরের বাহিরে রান্নারত চুলা হতে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় আশপাশের লোকজন এসে তার শরীর থেকে আগুন নেভাতে সহায়তা করে। একপর্যায়ে ভিকটিম যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে বাড়ীর পুকুরে লাফিযে পড়ে। দুপুর ৩ টার দিকে স্হানীয় লোকজন হিজড়াদের নগদ ১৫ শত টাকা দিলে চুমকি ও সোহাগী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। একই দিন বিকেলে অগ্নিদগ্ধ চুমকি চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি জানান,শুক্রবার দুপুরে অগ্নিদগ্ধ চুমকি থানায় এসে তার পুরোশরীর ঝলসে দেয়ার ঘটনার প্রতিকার চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে বিষয়টি। তাৎক্ষণিক ভাবে ওসি তদন্ত ইমদাদুল হক ও এসআই লোকেন মহাজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন।পুরো বিষয়টি তদন্তকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে।
অগ্নিদগ্ধ চুমকি সেনবাগ থানায় গণমাধ্যম কে জানান,বিষয়টি কাকতালীয় ভাবে ঘটেছে।তার ঝলসে যাওয়া শরীরের একটি ছবি দেখে মানুষজনের মনে দাগ লেগেছে।
কাদরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ভূঞা অগ্নিদগ্ধ চুমকিকে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।
অগ্নিদগ্ধ চুমকি ও সোহাগী উপজেলার উত্তর কাদরা এলাকায় বসবাস করে।