রাজনৈতিক দ্বন্দের বলি হলো বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের নিরীহ শিক্ষার্থীসামিয়া আফনান প্রীতি। রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণসম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ছাড়াও ঘটনাস্থলে মারা যান এই কলেজ শিক্ষার্থী।
পেশায় দর্জি মা আর কারখানার শ্রমিকবাবার পাশে দাঁড়াতে আগামী মাস থেকে একটি দোকানে বিক্রয় কর্মীর চাকরি নিয়েছিল সে। গেলোরাতে শাহজাহানপুরে টিপু হত্যাকান্ডের সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে মারা যায় প্রীতি।
সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রাজনৈতিক নেতা টিটুর শাহজাহানপুরের বাসায়লোকে লোকারণ্য হলেও, একই ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী সামিয়া আফরান প্রীতির বাসায় অদ্ভুতনীরবতা। নীরবেই মেয়ের জন্য শোক করছেন তার মাসহ স্বজনরা।
বাসায় বসেই দর্জির কাজ করেন প্রীতির মা হোসনে আরা বেগম। আর, বাবা মোহাম্মদজামাল উদ্দিন মিরপুরে একটি কারখানা চাকরি করেন মাত্র ১৫ হাজার টাকা বেতনে। টানাটানির সংসারেবাবা ছায়া হতে এপ্রিল থেকে একটি চাকরিতে যোগ দেয়ার কথা ছিলো প্রীতির।
প্রীতির মা কদিন আগেই হারিয়েছেন নিজের মা’কে। তাকে কোনোভাবেই বোঝানোযাচ্ছে না, মানতেও পারছেন না। মেয়ের এমন মৃত্যুতে হতবিহ্বল তার মা। জানান, তিনি বিচারচান না। কারণ তার বিশ্বাস বিচার চাইতেও যে অর্থ আর ক্ষমতার দরকার, তার কোনটাই তাদেরনেই।
বাবা জামাল উদ্দিনও বলেন, মেয়ের হত্যার বিচার চাই না। মামলা চালানোরমতো অবস্থাও নেই। আমরা নিরীহ মানুষ। বিচার চাইলে আল্লাহর কাছে চাই। তিনিই বিচার করবেন।আল্লাহ যেন মানুষকে হেদায়েত দেন, শান্তি দেন।
প্রীতি তার মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পশ্চিম শান্তিবাগের একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন। পাশের শাহজাহানপুর এলাকায় শুক্রবার নিহত আওয়ামী লীগ নেতা টিটু বাসায়অনেকের ভিড় থাকলেও প্রীতিদের বাসায় আসেন শুধু তাদের প্রতিবেশীরা।
সবার একটাই কথা। রাজনৈতিক দ্বন্দের বলি হলো একজন নিরিহ সম্ভবনাময় তরুণী।
প্রীতিদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। সেখানে যাতায়াত কম। বাবারচাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকে তার পরিবার। জামাল উদ্দিন মিরপুর-দুইয়ে একটি কম্পানির ফ্যাক্টরিরপ্রডাকশনে চাকরি করেন। অনেক কষ্টে মেয়ে প্রীতি ও ছেলে সামি ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায়ভাড়ায় থাকতেন।