নিজস্ব প্রতিবেদক বাকেরগঞ্জ :- বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের লোচনাবাদ গ্রামের পশ্চিম লোচনাবাদ খালের উপর নির্মিত সেতু যেন এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সেতুটির এক প্রান্তে ইউনিয়ন শ্যামপুর বাজার সহ লোচনাবাদ, শ্যামপুর, বোতরা সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার নলছিটির সাথে সংযোগ হয়েছে। অপর প্রান্ত দক্ষিণ লোচনাবাদ, ভিহারিপুর, ফলাঘর গ্রাম হয়ে কালিগঞ্জ বাজারের সাথে সংযোগ হয়েছে। লোচনাবাদ সড়কের এই সেতু এখন ভেঙে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতু ভেঙে যাওয়ার কারণে মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গত ৫ বছরের বেশি সময় ধরে ভেঙে আছে এই সেতুটির বিভিন্ন অংশ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করা হাট, বাজারের পথচারী ও স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থীসহ তিন গ্রামের হাজার হাজার মানুষের।
সরেজমিনে দেখা যায়, নড়বড়ে ও ভেঙ্গে যাওয়া সেতুর এক পাশের সিমেন্টের ঢালাই ভেঙ্গে পড়েছে। অপর পাশে সিমেন্টের ঢালাই ফেটে গিয়ে দেবে গেছে। ক্রস এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে ভাঙ্গা সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। কোন প্রকার যানবাহন চলছে না এই সেতু দিয়ে।
অপরদিকে, পাদ্রীশিপুর ইউনিয়নের ডাক্তার বাড়ি হতে বড় পুইয়াউটা দুর্গাপুর সড়কে দুর্গাপুর খালের উপর নির্মিত আয়রন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে যেতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নড়বড়ে ওই সেতুর সিমেন্টের ঢালাই বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙ্গে পড়েছে। ভেঙে যাওয়া স্থানে স্থানীয়রা বালু সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দিয়েছে। সেতুটির ক্রস এ্যাঙ্গেলগুলো ও সেতুর লোহার পিলার গুলো মরিচা ধরে ভেঙ্গে গিয়ে সেতুটি একদিকে কাত হয়ে গেছে।
তাই স্থানীয় লোকজন সেতুটি যাতে ধসে না পড়ে সেজন্য সেতুর দুই পাশ দিয়ে খালের মধ্যে বাঁশ কুপে দিয়ে সেতুর পিলার বানিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি যেকোনো সময় খালের মধ্যে ধ্বসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এছাড়াও কলসকাঠি ইউনিয়নের মুইনখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুটির সিমেন্টের ঢালাই এক যুগ আগে ভেঙে গেছে। স্থানীয়রা সেতুর উপরে সিমেন্টের ঢালাই না থাকায় পিলারের সাথে কাঠের মাচা তৈরি করে বেঁধে দিয়েছে।
সেতুটির নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে গেছে। পিলার গুলো ফাটল ধরে একদিকে কাত হয়ে রয়েছে। দক্ষিণ হাদিস গ্রামের হাজার হাজার মানুষ নিরুপায় হয়ে সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
এছাড়াও উপজেলার পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর চেয়ারম্যান বাজার থেকে আমুয়াছোব হয়ে নিয়ামতি ইউনিয়নের নিয়ামতি বাজারের সাথে সংযোগ সড়কে আমুয়ারছোব খালের উপর নির্মিত সেতুটি সিমেন্টের ঢালাই বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে গেছে। সেতুটির সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে সমতল ভুমির সাথে মিশে গেছে।
বর্তমানে এই সেতুটি দিয়ে পশ্চিম রঘুনাথপুর গ্রাম সহ মোল্লা পাড়া,পাড় কান্দা,মাঝের ধরা,সাতঘর, ছাব্বিশ ঘর এলাকার হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। সেতুটি পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে।
এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ১৭৪ নং মোল্লাপাড়া ফারুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ রঘুনাথপুর ফকির পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাশবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসা,রঘুনাথপুর দেশন্তর কাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শাহ আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। কোন প্রকার যানবাহন না চালায় শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, এখন সেতু নির্মাণের নতুন কোন প্রকল্প হাতে নেই। তবে সেতুগুলো নতুন করে নির্মাণ করার জন্য কোনো প্রকল্প চালু হলে সেখানে দেওয়া হবে।
News Editor
Leave a Reply