নিজস্ব প্রতিবেদক :- বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ১৪নং নিয়ামতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন সদস্য।
রবিবার (২০ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিতভাবে তারা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন।
অনাস্থা প্রস্তাবকারী সদস্যরা হলেন- ১নং ওয়ার্ডের বাবুল আকন, ২নং ওয়ার্ডের বাচ্চু হাওলাদার, ৩নং ওয়ার্ডের শামীম সাজ্জাল, ৪নং ওয়ার্ডের মোস্তফা, ৫নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলাম হাওলাদার, ৬নং ওয়ার্ডের আকিকুর রহমান পিন্টু হাওলাদার, ৭নং ওয়ার্ডের কালাম তালুকদার, ৮নং ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন, ৯নং ওয়ার্ডের আব্দুল খালেক ব্যাপারি ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আখি বেগম দুলু ও বেবী আক্তার ওয়ার্ডের মেম্বার।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির স্বজন প্রীতি করাসহ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেড় বছর অতিবাহিত হলেও পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেনি। পরিষদে আসা সরকারের কোন চিঠিপত্র ইউপি সদস্যদের সম্মুখে খোলা হয় না। হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নাজমুল যোগদান করলেও তাকে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। অধিকাংশ ট্যাক্সের রশিদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রাজস্ব আয়ে দেখানো হয়নি। ট্রেড লাইসেন্স ছাপিয়েছেন তার ইচ্ছে মতন বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনদের দ্বারা কালেকশন করিয়ে সিংহভাগ আত্মসাৎ করেছেন।
১৮০ জনের রেশন কার্ড অনলাইন করার নামে থেকে নিকট থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিষদের সকল বিষয়ে চেয়ারম্যান নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সরকারি যে কোনো বরাদ্দ সঠিকভাবে বন্টন করে না। সঠিক সময়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন না। অফিস সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র সঠিক সময়ে জমা হয় না।
সরকারি কোনো বরাদ্দপত্র ইউপি সদস্যদের নিকট প্রকাশ না করে নিজের ইচ্ছামত পরিষদ চালায়। অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (সিপিসি) উত্তরণ করে নিজের ইচ্ছে মতোই কাজ করেন। বরাদ্দ দ্বারা কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন তা ইউপি সদস্যরা জানে না। জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে পরিষদে আসা সদস্যদের হয়রানিসহ অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। ইউনিয়ন পরিষদের কর নিরপন এবং অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ইতোপূর্বে প্রদান করা কোনো সুপারিশ চেয়ারম্যান রক্ষা করেনি। তার পেশী শক্তি ও তার দল ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের কর্মীদের নিয়ে বেপরোয়াভাবে আইনশৃঙ্খলা তোয়াক্কা না করে পরিষদের কার্যক্রম চালায়।
৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান পিন্টু জনকন্ঠকে জানান, আমরা সব ইউপি সদস্যরা মিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনাস্থা পত্র জমা দিতে গেলে নির্বাহী কর্মকর্তাকে উপস্থিত না পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী হেমায়েতের কাছে অনাস্থা পত্র জমা দিয়ে রিসিভ কপি গ্রহণ করেছি।
ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বেচ্ছাচারিতার ১৫টি অভিযোগ করেছেন। তারা সে সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমি সারাদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ছিলাম। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের লিখিত অভিযোগ আমার কার্যালয়ে জমা দিতে পারে। নিয়ামতির ইউপি সদস্যরা অনাস্থাপত্র জমা দিলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
News Editor
Leave a Reply