1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Kanon Badsha : Kanon Badsha
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  4. [email protected] : News Editir : News Editir
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন

বিক্রি হচ্ছেন বিএনপির ৮০ নেতা!

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সময় এক্সপ্রেস নিউজ ডেক্স :- সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপির ৮০ নেতা ফসকে যাচ্ছেন বলে চাউর হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের ‘টোপ’ গিলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা। আসন্ন এ নির্বাচনকে ঘিরে যে ভাগবাটোয়ারা প্রক্রিয়ার কথা এতদিন নানা মহলে আলোচনা হচ্ছিল, তা যেন এবার সত্যি হতে চলেছে। বিএনপির ওই ৮০ নেতাকে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ছকমতো নির্বাচনে নিতে দলটিরই এক ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক এক সাংগঠনিক সম্পাদক ও একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ আলোচিত সংস্কারপন্থি একাধিক নেতা তৎপর রয়েছেন। দলটির একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে নানা সমীকরণের মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানা শঙ্কা। নির্বাচন হবে কি হবে না এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনাও। সরকার যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেই ফেলে তাহলে বিএনপির অবস্থান কি হবে- এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে রয়েছে নানা মত। তবে খোদ বিএনপিতেই আলোচনা আছে সরকার তাদের দলের একটা অংশকে নিয়ে নির্বাচন করার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে। দলের ৭২ থেকে ৮০ জন নেতাকে নির্বাচন নেওয়ার জন্য কয়েক মাস ধরে তৎপরতা চলছে ক্ষমতাসীনরা।

দলীয় সরকারে অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেও, দলের মধ্যে একটি অংশ ভেতরে ভেতরে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে ক্ষমতার অংশীদার হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনেক দিন ধরে। সে অংশটি দলের হাইকমান্ডকে এ-ও বোঝানোর চেষ্টা করেছে, সরকার বর্তমানে দেশ-বিদেশে নানামুখী চাপে আছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করা সম্ভব। হিসেব-নিকেশ তাদের পক্ষে থাকলে তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতেও পরামর্শ দিয়ে আসছিলো দলের হাইকমান্ডকে। কিন্তু দলের হাইকমান্ডের অনড় অবস্থানের কারণে ওই অংশটি নেপথ্যে থেকে সরকারের ছকে নির্বাচনের রোডম্যাপে হাঁটছে।

দল নির্বাচনে গেলে তারা দলের হয়েই নির্বাচনে লড়াই করবেন। তবে শেষ পর্যন্ত দল যদি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না আসে সেক্ষেত্রে সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে তারা ভোটে অংশ নেবে। প্রয়োজনে তারা পৃথক জোট গঠন করে ‘জাতীয়তাবাদী’ আদর্শের ব্যানারে নির্বাচনের পরিকল্পনা নিচ্ছেন। এসবের পেছনে বেশ কিছুদিন ধরেই কলকাঠি নাড়ছে ক্ষমতাসীনরা।

এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে সংসদে একটি বিরোধীদল গঠনের পরিকল্পনা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বহির্বিশ্বকে দেখানো হবে- বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে। এ সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দলও রয়েছে। বলা হবে- খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দণ্ডিত তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। দলের বেশ কয়েকজন নেতাও দণ্ডিত হওয়ায় নির্বাচনে আসতে পারেননি। এমনকি তারা বিএনপির ব্যানারও ব্যবহার করবে এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদেরকে নির্বাচনের জন্য বৈধ মনোনয়ন বোর্ড হিসেবে অনুমোদন দেবে।

দুই শীর্ষ নেতা দণ্ডিত হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ওই ভাইস-চেয়ারম্যানকে দলের চেয়ারম্যানও ঘোষণা করা হবে। দলের নির্বাচনকালীন চেয়ারম্যান হিসেবে ইসি তাকে বৈধতা দেবে। তিনি ওই ৭২ থেকে ৮০ জন নেতাকে নির্বাচনে নিয়ে আসবেন। এতে ৩০-৩৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র। এছাড়া দলে বঞ্চিতদের অনেককেই এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য খোলা কাগজকে বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে ইতোমধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দলের দায়িত্বশীল এক নেতা একাধিকবার এ প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া প্রভাবশালী দেশের একজন কূটনীতিকও তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তারেক রহমান তার কাছে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিনি জানিয়ে দেন- বিএনপির তৃণমূল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ নেতা আরও বলেন, আমরা (নেতারা) যে যাই বলি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিন্তু প্রতিনিয়তই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তৃণমূল নেতাকর্মীরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।

এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের এক উপদেষ্টা খোলা কাগজকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে তিন দফা বৈঠক হয়েছে। গেল জুন মাসেও এ বৈঠক হয়। কিন্তু তারেক রহমান নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হননি। উপদেষ্টা জানান, দলের ৭২ জনকে টার্গেট করে পরিকল্পনা সাজানো হয়। কিন্তু ৩২ জনকে সিট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরে তারা ৪০ জনকে টার্গেট করে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।

বিএনপির বাইরে গিয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়া তারা এখনই সামনে আনতে চাইছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আনার চেষ্টা চালাবে ওই অংশটি। যদি তারা সফল না হয় তাহলে বিএনপির ৪০ নেতাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হবে। সদ্য নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এবং তৃণমূল বিএনপির ব্যানারে তাদেরকে ভোটে আনার প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে তাদের একটি তালিকাও করা হয়। মূলত এই তালিকা ধরেই কাজ চলছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্নেল এবং এক ব্রিগেডিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিতই যোগাযোগ করে চলেছেন। দ্ইু-চারজনের সঙ্গে তাদের বৈঠকও হয়েছে। তারা হয়তো পরিস্থিতির বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিএনপি ও চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বিএনপির সরকারের সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন, সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলসহ সংস্কারপন্থিদের কয়েকজনের নাম সরকারের ছক বাস্তবায়নের এ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তবে ‘সংস্কারপন্থি’ হিসেবে পরিচিত দলের অনেকে ‘সংস্কারপন্থি’ তকমা আর নিতে রাজি নন। তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু ভাবছেন না।

সরকারের ছক বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার আরও যেসব নাম সূত্র জানিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছনÑ যুবদলের সাবেক দুই প্রভাবশালী নেতা, ছাত্রদলের একাধিক সাবেক নেতা, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সঙ্গে যুক্ত এক নেতা, রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল বিভাগের একাধিক নেতা। এর বাইরে দল থেকে বহিষ্কৃত দুজন ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পর্যায়ের এক প্রভাবশালী নেতাও রয়েছেন।
সূত্র জানায়, ওই অংশের অনেকের সঙ্গে সদ্য নিবন্ধন পাওয়া বিএনএম-এর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। বিএনএমের দায়িত্বশীল এক নেতাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে বিএনপির ক’জন নেতা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তা জানাতে চাননি তিনি। তারা বিএনএম-এর ব্যানারে নির্বাচন করতে চাইলে তাদের সুযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান ওই দায়িত্বশীল নেতা।

এদিকে, প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র ব্যানারেও নির্বাচনে যেতে পারেন বিএনপির কেউ কেউ। ইতোমধ্যে বিএনপির সাবেক দুই নেতা তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে খবর বেরিয়েছে। তারা হলেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

এ খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তৈমূর আলম খন্দকার ও শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির সদস্য নন। তারা তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তারা আরেকটা দল করতেই পারেন। বিএনপি একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এই দলে এমন খড়কুটো অনেক এসেছে আবার চলে গেছে। এতে বিএনপির কিছু যায়-আসে না।

বিএনএম-এর যুগ্ম আহ্বায়ক ও দলের মুখপাত্র ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন খোলা কাজগকে বলেন, আমাদের সঙ্গে বিএনপি ৫-৭ জন নেতার যোগাযোগ হয়েছে। শুধুই যে বিএনপি নেতাদের যোগাযোগ হয়েছে এমনটা নয়, আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা যোগাযোগ করেছে। তিনি বলেন, তারা আমাদের দল থেকে নির্বাচন করতে চান। দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিএনএম থেকেই নির্বাচন করবেন। তারা যদি দুর্নীতিমুক্ত হন, সমাজে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হন তাহলে আমাদের দলের ব্যানারে নির্বাচন করতে আপত্তি নেই। জাতীয়তাবাদী আর্দশের সঙ্গে মিল হলে জোট গঠন হতে পারে বলেও জানান সারোয়ার হোসেন।

সরকারের ছকে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিএনপির একটি অংশের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু খোলা কাগজকে বলেন, বিএনপিতে থাকলেই গুরুত্ব বহন করে। যে মুহূর্তে বিএনপি থেকে বের হয়ে যাবেন তখন তাদের আর গুরুত্ব থাকবে না। বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত হবেন তারা। অতীতেও সেরকম হয়েছে।

তিনি বলেন, সব সময় একই প্রক্রিয়া কাজ করে না। ২০১৪ সালে বিনাভোটে, ২০১৮ সালের দিনের ভোট রাতে করেছে আওয়ামী লীগ। এবার নতুন প্রক্রিয়ায় ভোট করতে চাইবে। কিন্তু সরকারের সব খেলা শেষ। এবার আর একতরফা ভোট করতে পারবে না।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যদি বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নেন তাহলে আপনাদের ভূমিকা কি হবে? এমন প্রসঙ্গে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, সে ধরনের কোনো খবর আমি এখন পর্যন্ত শুনিনি। ষড়যন্ত্র সব সময় ব্যর্থ হয়। স্বৈরাচারী সরকার এসব করে গণতন্ত্রকামী মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখে। কেউ এই ফ্যাসিবাদী, অবৈধ সরকারের সাথে যাবে বলে আমার মনে হয় না।

তিনি বলেন, সবসময় ষড়যন্ত্র হয়েছে, বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করেছে, তাতে কেউ সফল হয়নি। মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সফল হয়নি, এরশাদও সফল হয়নি। শেখ হাসিনাও এ ব্যাপারে সফল হতে পারবেন না। যারা চোরাবালিতে পা দেবে, তারাই হারিয়ে যাবে। এ দেশের তরুণ সমাজ কখনো তা মেনে নেবে না, গণতন্ত্রকামী মানুষ কখনো মেনে নেবে না। তরুণসমাজ সব ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews