প্রেক্ষাগৃহ থেকে মুঠোফোনে ধারণ করা সিনেমাটির কিছু ভিডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। আবার সিনেমাটির কিছু দৃশ্যকে কিছু দর্শক ‘অশ্লীল’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এ দুটো বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য সোমবার (৩ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তাতে উপস্থিত ছিলেন আফরান নিশো, রায়হান রাফি, তমা মির্জাসহ অনেকে। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে আফরান নিশোর একটি মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় বইছে।
নিশোকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, নিজের প্রথম সিনেমা এবং ঈদ উৎসবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকার কারণে কোনো চাপ অনুভব করেছেন কিনা। জবাবে এই অভিনেতা বলেন, চাপ তো কোনো সময় ছিল না। শুটিংয়ের সময় ছিল। আর কিসের চাপ? বয়স হয়ে গেছে চল্লিশের উপরে। অনেক দিন ধরে তো কাজ করছি।
অভিনেতার এই বক্তব্য শেষ হতেই একজন বলেন, বয়সটা তাহলে বলে দিলেন। আর ঠিক তখনই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন নিশো। অনেকটা এভাবে তিনি বলেন, বয়স বলতে আমার তো সমস্যা নেই। আমি তো সো কল্ড ওই হিরো না যে, বিয়ে করে বউয়ের কথা বলব না, বাচ্চার কথা বলব না।
তবে ছোট পর্দার এই জাত অভিনেতা তাৎক্ষণিক বিষয়টি সামলে নেন। বলেন, এসব ধারণা অনেক আগে ছিল যে, তোমরা যারা নায়ক তারা বের হয়ে মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করো না, বেশি এক্সক্লুসিভ থাকো।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা যারা ছোট পর্দায় কাজ করেছি, আমাদের অনেক বেশি উৎসাহ-অনুপ্রেরণা দিয়েছে ভক্তরা। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা, সহজ হওয়া, কথা বলা—এসব ভদ্রতা ও আন্তরিকতা।
‘আমি তো সো কল্ড হিরো না যে, বিয়ে করে বউয়ের কথা বলব না, বাচ্চার কথা বলব না।’—নিশোর বক্তব্যের এই অংশটুকু নেটিজেনদের বড় একটি অংশ ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। এ নিয়ে নেট দুনিয়ায় হইচই লেগে গেছে। নাম উল্লেখ না করে শাকিব খানের গোপন বিয়ে-বউ ও সন্তান নিয়ে খোঁচা মেরেছেন নিশো, দাবি শাকিবিয়ানদের।
ফেসবুকে ফিরোজ আহমেদ নিজো নামে একজন লিখেছেন, আপনি নিঃসন্দেহে খুব ভালো অভিনয় করেন। আপনার অভিনয় আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি। শাকিব খানের সিনেমা আমি দেখি না, তাকে আমার পছন্দও না! তবে আপনার কথাটা শাকিব খানের দিকে ঈঙ্গিত করে। এইভাবে কথাটা এইসময় এইভাবে বলা মোটেই উচিত হয়নি। অন্যের সমালোচনা দেখে সত্যি আমি অবাক হয়েছি। আপনাকে আরো বিনয়ী হতে হবে। আশা করি, সামনে এই ভুলগুলো করবেন না।
আরেকজন লিখেছেন, নাটকের নায়কের আবার অহংকার। শাহেদ শাহ লিখেছেন, নিশোর মতো গুণী অভিনেতার পার্সোনালিটির সঙ্গে অন্যের সমালোচনা অপ্রত্যাশিত।
জাভেদ ইকবাল লিখেছেন, ছোট পর্দার প্রিয় একজন অভিনেতা ছিল। বর্তমানে তার কথার ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে তার পা মাটিতে পড়তেছে না। সিয়াম যখন নাটক ছেড়ে সিনেমায় আসছিল অনেককে দেখছি শাকিব খানের টাইম শেষ হেনতেন কত কি বলতে, দিন শেষে রাজা রাজাই থাকে। এসব বক্তব্য দিয়ে নিশো নিজেকে ছোট…কাতারে নিয়ে গেছে।
নিশো তার বক্তব্যে কারো নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু সাধারণ সিনেমাপ্রেমীদের পাশাপাশি শাকিব ভক্তরা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেননি। যদিও নেটিজেনদের একটি অংশ নিশোর মন্তব্য সমর্থন করছেন।
সাইফুর সিয়াম নামে একজন লিখেছেন, এখানে শাকিবের কথা আসেনি এবং সেও শাকিবকে মিন করে কিছু বলেনি। এটা সত্য যে এক সময় হিরোরা এক্সক্লুসিভ থাকার চেষ্টা করত কিংবা বিয়ে করলেও তা গোপন রাখত শুধু জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে। লক্ষ্য করুন, জায়েদ খানের দিকে। তার স্টেটমেন্টগুলো খেয়াল করলে দেখবেন এই ধরনের লুকিয়ে রাখার মনোভাব অনেক নায়কেরই আছে। আপনারা শুধু শুধু হিংসা ছড়াচ্ছেন।
নিশোর এমন মন্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছেন শাকিবিয়ানরা। নেটপাড়ায় চলছে তুমুল প্রতিবাদ। এর অংশ হিসেবে ফেসবুক থেকে ছোট পর্দার এই অভিনেতাকে ‘আনফলো’ করার মিশনে নেমেছেন তারা। এ ছাড়া দিয়েছেন বয়কটের ডাক।
বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে দুই গ্রুপ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে বাক্যবিনিময়। কোথাও কোথাও পরস্পরকে আক্রমণ করে মন্তব্য করছেন তারা। তবে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে এখনো মুখ খুলেননি নিশো।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply