নাঈম সজল :নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ বিভাগের উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের উদ্বোধন এর মধ্য দিয়ে আইসিইউ বিভাগের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হলো।
গত ১৬ অক্টোবর রাতে সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাদরা হামেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাংবাদিক এম এ আউয়াল এর একমাত্র মেয়ের সিজারিয়ানের সময় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় উম্মে সালমা নিশি (২৭) ও তার নবজাতক পুত্র সন্তানের মৃত্যু ঘটেছে নোয়াখালীর সাউথ বাংলা হসপিটালে। সিজারিয়ান অপারেশনে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: আক্তার হোসেন অভি তার স্ত্রী ডা: ফৌজিয়া ফরিদ ও ডা: জাহিদ সহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা সন্তানের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্ট এর কথা বলে কুমিল্লায় প্রেরন করে।
সাংবাদিক এম এ আউয়াল সময় এক্সপ্রেস নিউজ কে জানান,সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই তারা সিজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ৩০ মিনিটের মধ্যেই মা ও সন্তানের মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় নোয়াখালী জেলা ব্যাপী তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী ওঠে।
এ ব্যাপারে গত ২৩ অক্টোবর সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়া সহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগ চালুর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার দুই দফায় শক্তিশালী দুটি তদন্তটিম গঠন করে। ইতিমধ্যে দুইবার সময় বৃদ্ধি করে বাদী সহ অভিযুক্তদের পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকার গ্রহন করে তদন্ত কমিটি। এ ব্যাপারে গত ২৪ অক্টোবর রাতে নোয়াখালীতে আইসিইউ প্রতিষ্ঠা সহ জড়িতদের শাস্তির দাবী জানিয়ে সাংবাদিক এম এ আউয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ডা: আক্তার হোসেন অভি ডা: ফৌজিয়া ফরিদ ও ডা: জাহিদের ভুল চিকিৎসায় মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় সরকারের উচ্চ পদস্হ কর্মকর্তা,চিকিৎসক, রাজনীতিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা,গণমাধ্যম কর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন,শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন পেশার লোকজন স্তম্ভিত হন এবং দায়ীদের শাস্তির দাবী করেন।
এ ব্যাপারে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার সময় এক্সপ্রেস নিউজ কে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ১৫ অক্টোবর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ বিভাগ চালু করা হয়েছে। মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপক্ষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে।
বৃহত্তর নোয়াখালীতে ৮০ লক্ষ লোক বসবাস করে। অসুস্থতায় তিন জেলায় আইসিইউ ব্যবস্হা না থাকায় এতদিন রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সাংবাদিক এম এ আউয়াল এর একমাত্র মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর ঘটনায় তার আবেদনে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করলেন।
উল্লেখ্য, ডা: আক্তার হোসেন অভি (১৩৪০৪৯)ও ডা: ফৌজিয়া ফরিদ (১৩০৩০০) স্বামী স্ত্রী মিথ্যা পদ পদবী ব্যবহার করে যেমন মেডিসিন,নিউরোমেডিসিন,প্রসূতি গাইনী স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে নিরীহ রোগীদের সাথে প্রতারনা করছেন।এর মধ্যে নোয়াখালীর আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী নুরে ফারযানা তাদের প্রতারনার শিকার হন।এ ব্যাপারে আবদুল হামিদ বাদী হয়ে সিভিল সার্জন সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ছাড়া ডা: আক্তার হোসেন অভি ও ডা: ফৌজিয়া ফরিদের বিরুদ্ধে নোয়াখালী, সোনাইমুড়ী ও চাটখিলে অপচিকিৎসা সহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply