র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-২ এলিট র্ফোস হিসেবে অত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরণের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ছুরি ছিনতাই চাঁদাবাজদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ মোহাম্মদপুরবাসী ।
তারাই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য কর্তৃক ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করেছেন র্যাব-২ ।
এ সকল সন্ত্রাসীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী ও মামলা রুজু হয়। বিভিন্ন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। অতি সম্প্রতি মোহাম্মদপুর ও তার আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র্যাব-২ । ফলশ্রুতিতে র্যাব-২ এর টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র্যাব-২ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়ীবাঁধ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসী গ্যাং ‘কবজি কাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম মূলহোতা মোঃ হায়াত টাকলা হায়াত (৪০)মোঃ সাগর (১৯)মোঃ ইসমাইল হোসেন (১৯)মোঃ সুমন (৪৫)দের গ্রেফতার করে।
র্যাব-২ অপর একটি দল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বুদ্ধিজীবি কবরস্থান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপর একটি সন্ত্রাসী গ্যাং ‘বিরিয়ানী সুমন গ্রুপ’ এর মূলহোতা মোঃ সুমন বিরিয়ানী সুমন (২৮) ও তার সহযোগী মোঃ বাদল (২৬)মোঃ আকাশ (১৯)মোঃ রাব্বি (২৮)মোঃ রাসেল (৩৮)ঢাকাদের’কে গ্রেফতার করা হয়।উদ্ধার করা হয় ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় ধারালো অস্ত্র।
দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান,গ্রেফতারকৃতরা পূর্বের বিভিন্ন অপরাধ এবং ভবিষ্যতের বিভিন্ন সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সর্ম্পকে তথ্য প্রদান করে।গ্রেফতারকৃত ৪ জন ‘কব্জি কাটা গ্রুপ’ এবং ৫ জন ‘বিরিয়ানী সুমন গ্রুপ’ এর সদস্য। তাদের দুটি গ্রুপে প্রায় ৩০-৩৫ জন সদস্য রয়েছে। কব্জি টাকা গ্রুপটি সন্ত্রাসী আনোয়ার ও টাকলা হায়াত এর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়াও তারা ‘আনোয়ার সিন্ডিকেট’ নামেও পরিচিত। এই গ্রুপের সদস্যরা পূর্বে ‘আনোয়ার গ্রুপ’ নামে অন্তভূক্ত ছিল।
তিনি আরো জানান নিজেদের মধ্যে অন্তকোন্দলের কারনে তারা ২/৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। বিরিয়ানি সুমন গ্রুপটি গেৃফতারকৃত সুমন বিরিয়ানী সুমন এর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রেফতারকৃতরা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এই গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রæত পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। তারা বর্ণিত এলাকাসমূহে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের জন্য টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করতো।
এছাড়াও তারা মাদক সেবনসহ বর্ণিত এলাকাসমূহে মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিল। মূলত তারা মোহাম্মদপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন গাড়ীর হেলপার ও ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা ইত্যাদি পেশার আড়ালে তারা মূলত মোহাম্মদপুর ও তার আশেপাশের এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতো বলে জানা যায়।তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে এবং এ সকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।
তিনি আরো জানান,আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা মোহাম্মাদপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের পাশাপাশি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য গ্রেফতারকৃতরা পরিকল্পনা করছিল বলে জানা যায়। এ উদ্দেশ্যে তারা এলাকায় ধারালো অস্ত্রসহ শো-ডাউন, বিভিন্ন স্থানে জনসাধারণকে ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার পরিকল্পনা করছিল।মূলত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে পেশি শক্তি প্রদর্শন ও সহিংসতা করার পরিকল্পনা করছিল জানা যায়।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply