1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Khan Md Mahadi : Khan Md Mahadi
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২০ অপরাহ্ন

‘সিনেমায় বিনিয়োগ ভুল নয়’

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০২৩
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী: ঈদুল আযহায় মুক্তিপ্রাপ্ত সবগুলো সিনেমা মোটামুটি ব্যবসা করছে। কিন্তু এই ঈদে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা প্রিয়তমা এরই মাঝে দশ কোটি ত্রিশ লাখ টাকার ব্যবসা করেছে মাত্র এক সপ্তাহে। তথ্যটা জেনেছি অনুজপ্রতিম সাংবাদিক ও খ্যাতিমান গীতিকবি জাহিদ আকবরের পোষ্ট থেকে। জাহিদ দেশের শীর্ষ ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারে আছেন। ওই পত্রিকার মালিকদেরই প্রতিষ্ঠান ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি, যারা আলফা আই-এর সাথে যৌথভাবে সুড়ঙ্গ প্রযোজনা করেছে।

প্রিয়তমা কি আসলেই এতো ব্যবসা করলো? প্রশ্নটা মাথায় যখন ঘুরপাক খাচ্ছে তখন সহকর্মী তাজুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করলাম এটা কিভাবে সম্ভব? প্রশ্নের উত্তরে তাজুল নিচের বিবরণটা দিলো:

মোট বিক্রি ১০,৩০,০০,০০০ টাকা। মোট শো ৩১৫০+ মানে (৩১৬০ টা)। প্রতি শো হতে মোট বিক্রি ৩২,৭০০ টাকা প্রায়। প্রতি টিকেট এর দাম প্রায় ৬৫.৫০ পয়সা ও শো প্রতি গড়ে ৫০০ দর্শক হয় তাহলে হিসেবটা সঠিক। মোট ১০৭ হলে প্রতিদিন ৪ টা শো মোট ৪২৮ টা শো অর্থাৎ ৭ দিনে ২৯৯৬ টি শো। কোন কোন হলে ৫ টা করে শো গেছে সেই হিসাবে ৩১৫০+ শো।

তারমানে, প্রিয়তমা আসলেই এক সপ্তাহে দশ কোটি ত্রিশ লাখ টাকার ব্যবসা করেছে, যেখানে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অন্তত তাদের বিনিয়োগকৃত আড়াই লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন। এই আড়াই লাখ সংখ্যাটা বাজারে ঘুরছে যদিও আমার মনে হয় প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণটা আরেকটু কম। অর্থাৎ, বিনিয়োগ উঠে গেছে। এবার লাভের পালা।

জাহিদ আকবরের পোষ্টে আরেক অনুজপ্রতিম সাংবাদিক তুষার আদিত্য প্রশ্ন করেছেন, সুড়ঙ্গ ছবির ব্যবসা তাহলে এক সপ্তাহে কতো হলো।।আমি নিশ্চিত, এই হিসেবটা বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রযোজক এবং নির্মাতারা জানেন। হয়তো ওনাদের মাধ্যমেই আমরাও জানতে পারবো। পাশাপাশি, ক্যাসিনো, লাল শাড়ী এবং প্রহেলিকা সিনেমার ব্যবসার অংকটাও আমরা জানতে পারবো হয়তো।

ঈদে যখন সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে তখন অনেকের হাতেই বাড়তি টাকা নেই। কারণ ঈদে খরচ। পাশাপাশি ওই সময়টায় অনেকেই ঢাকার বাইরে নিজের পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে যারা চাকরী করেন তাঁরা বেতন পাবেন। মানে দ্বিতীয় সপ্তাহে দর্শকের সংখ্যাটা একই থাকবে কিংবা টিকেটের জন্যে দর্শকের চাপটা বাড়বে।

বাংলাদেশে জনসংখ্যার অনুপাতে ঈদ ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে নতুন দুটো সিনেমা মুক্তি পেলে ব্যবসা করার কথা। কিন্তু সেখানে ব্যবসাটা হয়না কেনো? তাহলে কি আমাদের সিনেমা দর্শকরা মূলত ঈদের সময়েই ছবি দেখতে হলে যান?

একটা পরিসংখ্যান দেয়ার চেষ্টা করছি।

এই ঢাকা শহরে প্রায় দু কোটি মানুষের বসবাস। যাদের প্রায় ত্রিশ লাখ কর্মজীবী কিংবা চাকরিজীবি। অর্থাৎ সন্ধ্যের আগে ওনাদের পক্ষে হলে গিয়ে সিনেমা দেখা সম্ভব নয়, ছুটির দিনগুলো ছাড়া। যারা শিক্ষার্থী তাদের পক্ষেই দিনের বেলায় হলে গিয়ে সিনেমা দেখা কষ্টকর। বাকি থাকেন গৃহিণীরা যারা সংসার সামাল দিয়ে দিনের বেলায় সিনেমা দেখার সময় হয়তো পাননা। কিন্তু বিকেলের শো ওনাদের পক্ষে হয়তো দেখা সম্ভব। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সিনেপ্লেক্সগুলোর মতোই আমাদের সিঙ্গেল স্ক্রিন হলগুলোর পরিবেশ ভালো করতে হবে। পাশাপাশি আধুনিক শব্দ যন্ত্র ও কারিগরি সুবিধা সংযুক্ত করতে হবে। তবে আমি বারবার যে বিষয়টা জোর দিয়ে আসছি তা হলো, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, যেমন নেয়ফ্লিক্স, আমাজন ইত্যাদিতে কিভাবে আমাদের দেশে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো ইংরেজী সাব টাইটেলসহ নিয়মিত তোলা যায় এটার ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে চলচ্চিত্র শিল্পের সংশ্লিষ্টরা আমাদের পরিরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোর মাধ্যমে উদ্যোগ নিলে অবশ্যই ইতিবাচক ফল আসবে।

সিনেমা হলগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম-এ বাংলাদেশে নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে পর্যাপ্ত আয় আসবেই। যার ফলে প্রযোজকদের বিনিয়োগ অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত হবে। আমার বিশ্বাস, সিনেমাহল, সিনেপ্লেক্স এবং আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম-এ আমাদের সিনেমাগুলো চললে প্রত্যেকটা সিনেমা থেকে গড়ে অন্তত দুই কোটি টাকা উঠে আসবেই। আর হিট সিনেমা হলে তো কথাই নেই। যেমন প্রিয়তমা এক সপ্তাহেই দশ কোটি ত্রিশ লাখ আয় করতে সক্ষম হলো। অর্থাৎ, প্রিয়তমা যদি আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তোলা যায় সেক্ষেত্রে বাড়তি আরো কয়েক কোটি টাকা চলে আসবে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের প্রযোজকদের হলিউড ভিত্তিক পত্রপত্রিকা, যেমন হলিউড রিপোর্টার এ ওই সিনেমা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে যে ক’টা ইংরেজী পত্রিকা আছে এগুলোতেও বেশিবেশি করে নিউজ করতে হবে। কারণ, গুগল নিউজের বদৌলতে ইংরেজী পত্রিকায় প্রকাশিত কনটেন্টগুলো সহজেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায়।

গত কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে আমার সম্পাদনায় ইংরেজী পত্রিকা ব্লিটজ প্রকাশিত হচ্ছে, যা গুগল নিউজ-সহ সবগুলো সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত যাচ্ছে। পাশাপাশি হিন্দুস্তান টাইমস সিন্ডিকেশন এর মাধ্যমে আমাদের নিউজ কিংবা ফিচার রয়টার্সসহ ৭৫০ এর বেশি গণমাধ্যমে ছড়াচ্ছে। আমাদের পত্রিকায় কোনোকিছু প্রকাশিত হওয়ার সাথেসাথে আড়াই লাখের বেশি পাঠক ইমেইল এলার্ট পান। সবমিলিয়ে, আমাদের পাঠক সংখ্যাটা বেশ বড়। বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যদি এদেশের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তোলার ক্ষেত্রে কিংবা বিদেশে দর্শক আকর্ষিত করার ক্ষেত্রে আমাদের পত্রিকার সহযোগিতা চান, আমরা অবশ্যই এটা করতে প্রস্তুত।

এবারের ঈদ প্রমাণ করে দিলো, চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ ভুল নয় কিংবা লোকসানি নয়। শুধু সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সিনেমা নির্মাণ করতে পারলে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আবার জেগে উঠবেই।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews