নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই; শপথের মধ্য দিয়ে তাদের অভিষেকের জন্য প্রস্তুত বঙ্গভবন। এই শপথের মধ্যে দিয়েই টানা চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা শপথ নেবেন।
নতুন সরকার গঠনে ইতোমধ্যে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী। আর ১১ জন পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনিই বুধবার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম প্রেস ব্রিফিং করে জানিয়ে দেন।
বিদায়ী সরকারে থাকা প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের অনেকের জায়গা হয়নি নতুন মন্ত্রিসভায়। গতবারের মত এবারও শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভার সবাই আওয়ামী লীগের, শরিক দলের কাউকে তিনি ফেরাননি। নতুন সরকারের অর্ধেকের বেশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী প্রথমবারের মত সরকারের দায়িত্ব পালন করতে আসছেন। বিদায়ী সরকারে থাকা ১৫ মন্ত্রী এবং ১৩ প্রতিমন্ত্রী এবং দুই জন উপমন্ত্রীর নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলেই ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি গঠিত পুরনো সরকারের দায়িত্ব শেষ হবে। যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা ছিলেন, মন্ত্রিসভার শপথের আগেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হবে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, “শপথ আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ১৩০০ অতিথিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে বঙ্গভবন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ অতিথিদের দাওয়াতপত্র পাঠিয়েছেন।”
তিনি জানান, দরবার হলে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে। সামনের সারিতে অতিথিদের কে কোথায় বসবেন তাদের নামের ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একসঙ্গে শপথ নেওয়ার সুবিধার জন্য বসানো হয়েছে মাইক স্ট্যান্ড। শপথ অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবনের মাঠে থাকছে আপ্যায়নের ব্যবস্থা। নতুন মন্ত্রিপরিষদর সদস্যদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে নতুন গাড়ি। পরিবহন পুল থেকে এসব গাড়ি বুঝে নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বুধবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পাঠ করাবেন। তারপর মাননীয় মন্ত্রীদেরকে শপথ পাঠ করাবেন, এরপর প্রতিমন্ত্রীদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রীসভা ভেঙে গেছে বলে গণ্য হবে।”
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মন্ত্রণালয় ভাগ করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর। তিনি কাকে কোন মন্ত্রণালয় দেবেন, সেটি বন্টন করার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সবাইকে জানিয়ে দেবে।
মাহবুব হোসেন বলেন, “শপথের পরই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নেব। শপথ হওয়ার পরই আমরা প্রজ্ঞাপন জারি করে দেব।”গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি করে আসন পেয়েছে। একটি আসনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।
বুধবার ২৯৮ জন সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছ থেকে শপথ নেন। সেদিনই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। শেখ হাসিনা বুধবার বিকালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে গেলে টানা চতুর্থ মেয়াদে তাকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply