বিনোদন প্রতিবেদক:ঢাকার চলচ্চিত্রের এক সময়কার অশ্লীল ছবির চিহ্নিত পরিচালক শাহীন সুমন। দেশে ডিজিটাল চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হলে তিনি নতুন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে ‘ভালোবাসার রঙ’ নামের একটি ছবি নির্মাণ করেন। ওই ছবিতে নতুন জুটি বাপ্পী চৌধুরী ও মাহিয়া মাহি ঢাকার চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হন। সেই সুবাদে শাহীন সুমন আর বাপ্পী চৌধুরী’র সম্পর্ক হলো গুরু – শিষ্যের। মজার বিষয় হলো এই গুরু – শিষ্যের সম্পর্ক এখন নাকি সাপে – নেওলে। তাদের এমন বৈরী সম্পর্কের নেপথ্যে রয়েছেন তৃতীয় সারির এক চিত্রনায়িকা, নাম তার জাহারা মিতু।
এই মিতু সম্পর্কে জানা যায়, এক সময় তিনি একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতেন। এরপর একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। রাতারাতি শোবিজ সেলিব্রেটি হয়ে কাড়িকাড়ি অর্থ, গাড়ি – বাড়ির মালিক হওয়ার লোভে গার্মেন্টসের চাকুরী ছেড়ে মিডিয়ায় নাম লেখান। কিছু অশ্লীল নামের শর্ট ফিল্ম এবং মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার পর মিতু চলচ্চিত্রে আসেন। তবে এক্ষেত্রে তার অভিনয় এবং ভাগ্য সহায় হয়নি। বাপ্পী চৌধুরী’র সঙ্গে নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তারই সহায়তায় ‘জয়বাংলা’ এবং ‘শত্রু’ নামের দুটি ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু মিতু’র জন্যে চরম হতাশা বয়ে আনে ছবি দুটির ব্যবসায়িক ব্যর্থতা। তাই তো বাপ্পী – মিতু জুটি ঢাকার চলচ্চিত্রের ব্যর্থ জুটির তকমা পায়। দর্শক তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় মিতু’র পাশাপশি বাপ্পী’র ক্যারিয়ারেও লাগে শনির দশা। তাই তো এই নায়কের সচল ফিল্ম ক্যারিয়ার এখন অচল হয়ে পরেছে। সাবেক প্রেমিকা নায়িকা মিতু’র মতো তিনিও এখন ব্যর্থ এবং বেকার নায়কে পরিণত হয়েছেন।
মিতুকে বাপ্পী’র সাবেক প্রেমিকা নায়িকা এই কারণেই বলা হলো যে, তাদের মধ্যে এখন আর প্রেমের সম্পর্ক চলমান নেই। মিতু এখন অনেকটাই প্রকাশ্যে প্রেম করছেন বাপ্পী’র গুরু শাহীন সুমনের সঙ্গে। মজার বিষয় হলো – এই বাপ্পীই শাহীন সুমনের সঙ্গে মিতু’র পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করে এনে গুরু শাহীন সুমনকে দিয়ে ‘সুলতান’ নামের একটি ছবি বানান। এই ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন বাপ্পী নিজে, আর তার নায়িকা হন প্রেমিকা জাহারা মিতু। শোনা যায়, ওই ছবির শুটিং করতে গিয়েই নাকি বাপ্পীকে ছেড়ে শাহীন সুমনের সঙ্গে মিতু পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
জানা যায়, ‘সুলতান’ ছবি করতে বাপ্পী শুধু প্রেমিকা মিতুকেই হারাননি, আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হয়েছেন। ছবিটি নির্মাণের দুই বছর পার হয়ে গেলেও ছবিটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। বাপ্পীও তার বন্ধুর কাছ থেকে আনা লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাননি। শাহীন সুমনের ঘনিষ্ঠ একজন নৃত্যপরিচালক জানিয়েছেন, গেলো বছর রোজার সময় টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে শাহীন সুমন এবং বাপ্পী’র সঙ্গে এফডিসিতে ঝগড়া হয়। তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার উপক্রম হয়। মূলত এরপর থেকেই গুরু – শিষ্যের সম্পর্কের অধঃপতন এবং অতঃপর শিষ্যের প্রেমিকা মিতুকে নাকি শাহীন সুমন নিজের করে নেন। এখনও তাদের দুর্বার প্রেম চলমান – এমন গুঞ্জন এখন ফিল্ম পাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নব্য প্রেমিক জুটি শাহীন সুমন – জাহারা মিতু দু’জনেই বর্তমানে বেকার সময় পার করছেন। গেলো বছর তারা একসঙ্গে কলকাতায় গিয়েছিলেন প্রোডিউসার মিটিং করতে। কিন্তু ওই প্রযোজক মিতুকে পছন্দ না করায় সেই প্রজেক্ট আর হয়নি। এরপর মাস দুয়েক আগে নাকি তারা দুবাই যান নতুন একজন প্রোডিউসারের সঙ্গে মিটিং করতে। দুঃখের বিষয় সেটিও সফল হয়নি। এরপর সর্বশেষ গেলো সপ্তাহে মিতু তার অ্যানি নামের এক বান্ধবীসহ কলকাতায় গেছেন প্রোডিউসার খুঁজতে। সেখানে তাদের পানশালায় দেখা পাওয়ার খবরও রয়েছে বাংলাদেশী সাংবাদিকদের কাছে। শোনা যাচ্ছে, এবারও নাকি শাহীন সুমন – জাহারা মিতু’র প্রোডিউসার হান্টিং মিশন ব্যর্থ হয়েছে।
সর্বশেষ জানা গেছে, গুরু শাহীন সুমন আর সাবেক প্রেমিকা মি’তুর সঙ্গে বাপ্পী’র এখন কথা বলা এমনকী মুখ দেখাদেখিও বন্ধ। অন্যদিকে, পিতৃ বয়সী প্রেমিক শাহীন সুমনের প্রতি ভালোবাসায় আস্থা রেখে তার সঙ্গেই নাকি পরকীয়া সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছেন মিতু – এমন গুঞ্জন এখন জোরালো হচ্ছে। যদিও নতুন প্রেমিকের কাছ থেকে এখনও নতুন কোনো ছবি উপহার পাননি কুফা খ্যাত এই ব্যর্থ ও বেকার চিত্রনায়িকা। তেমনি তার বর্তমান প্রেমিক শাহীন সুমনও বেকার। তেমনি বেকার তার প্রাক্তন বাপ্পী চৌধুরীও। অর্থাৎ ত্রিভূজ প্রেমের সম্পর্কে টানাপোড়েন কাটিয়ে মিতু এখনও শাহীন সুমনের ওপর ভরসা করেই বেকার জীবন যাপন করছেন।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply