1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:০৬ অপরাহ্ন

ভাড়া না দিয়ে কার্যালয় দখল: নুরদের বিরুদ্ধে ভবন মালিকের মামলা

  • আপডেট সময় শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

খান মেহেদী :- নুরের দাবি, মাসিক ভাড়ার যে চুক্তি হয়েছিল, সেটি অনুদান হিসেবে দলকে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ভবন মালিক।

নুরুল হক নুর ১৬ মাস ধরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা কক্ষের ভাড়া দিচ্ছেন না এবং তাকে কক্ষ ছাড়তে নোটিস দিলে তিনি সেটি দখল করে নেওয়াসহ নানা হুমকি দিচ্ছেন- এমন অভিযোগ এনে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলাটি করেছেন পুরানা পল্টন এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবন মালিক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান। মামলায় নুরের নেতৃত্বাধীন অংশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭৫ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার ওই কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হাঙ্গামার কয়েক ঘণ্টার পর গভীর রাতে পল্টন থানায় মামলাটি হয়।

এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে নুর বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী তাকে উচ্ছেদের আগে ছয় মাস সময় দেওয়ার কথা। তাকে ওই সময় দিতে হবে।

১৬ মাস ভাড়া না দেওয়ার বিষয়ে তার দাবি, ভবন মালিক এখন যে ভাড়ার কথা বলছেন, সেটি দলকে অনুদান হিসেবে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

অবশ্য ভাড়ার যে চুক্তিপত্র নুর নিজের ফেইসবুক পেজে প্রকাশ করেছেন, তাতে অনুদানের কোনো কথা লেখা নেই। তাতে মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে ৭৮ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা লেখা আছে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর তার রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এই ভবন মালিক মিয়া মশিউজ্জামানকেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেন।

ইসরায়েলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক আর বিদেশ থেকে তোলা টাকার হিসাব না দেওয়ার অভিযোগ তুলে দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া সম্প্রতি নুরের বিরাগভাজন হলে মশিউজ্জামান এই পদক্ষেপ নিলেন।

নুররা দল থেকে কিবরিয়াকে বের করে দেওয়ার উদ্যোগ নিলে সম্প্রতি ভবন মালিক নুরদেরকে উচ্ছেদের নোটিস দেন। এরপরই ভাড়া না দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।

মামলায় কী অভিযোগ

মশিউজ্জামানের করা মামলায় নুরদের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি জনতাবদ্ধ’, ‘অনধিকারভাবে’ অফিসে প্রবেশ, লোহার গেইট, কাঠের দরজা, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বলা হয়েছে, মাসিক ভাড়ার বিনিময়ে ২০২২ সালের ১ মার্চ থেকে মিয়া মশিউজ্জামানের প্রীতম জামান টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় ২৬০০ বর্গফুটের কক্ষটিকে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করার চুক্তি করেন নুরুল হক নুর। কিন্তু ১৬ মাস ধরে ভাড়া পরিশোধ না করে শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে।

ভবন মালিক জানান, কিছুদিন আগে বিভিন্ন সূত্র ও সাংবাদ মাধ্যম থেকে নুরের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি সংগঠন ও ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার খবর জানতে পারেন তিনি। এরপর তিনি অফিস ছেড়ে দেওয়ার জন্য লিখিত নোটিস দিয়েছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, অফিস ছাড়ার নোটিস দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুল হক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তার অফিসটি ছাড়বেন না এবং তা দখল করে নেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন। তাই ভবন মালিক বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার দিকে ওই অফিসের সামনে একটি লোহার কলাপসিবল গেইট লাগিয়ে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন।

সেদিন বিকেল ৩টার দিকে নুরুর নেতৃত্বে আসামিরা অফিসের সামনে ‘বেআইনিভাবে’ জড়ো হয়ে কলাপসিবল গেইট ভাঙার চেষ্টাসহ তাকে হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে এজাহারে।

পুলিশ এসে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আদালতের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির পরামর্শ দিলেও নুররা সন্ধ্যা ৬টায় অফিসের সামনের লোহার গেইট ও কাঠের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।

মশিউজ্জামান লিখেছেন, সেখানে নুর ও অন্যরা তাকে নানা ‘হুমকি ধমকি দিয়ে’ ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

পল্টন থানার ওসি মো. সালাহউদ্দীন মিয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টায় মামলাটি তালিকাভুক্ত করা হয়। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।”

মশিউজ্জামানের করা মামলায় নুর ও রাশেদ খাঁন ছাড়াও আসামি হিসেবে শহীদুল ইসলাম ফাহিম, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, শাকিল উজ্জামান, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, নাদিম হাসান, মনজুর মোরশেদ, বিনা ইয়ামিন মোল্যা, রবিউল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম নুর, ফাতেমা তাসনীম, হেলেনা আক্তার, সাব্বির হোসেন, অর্ণব হোসেন, আবির ইসলাম সবুজ ও ইমরান হোসেনের নাম আছে।

ছয় মাস দখলে রাখার ঘোষণা নুরের

এই মামলার পর শুক্রবার বিকালে জামান টাওয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসে নুর বলেন, তিনি আরও ছয় মাস সেই কক্ষটি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করবেন। এরপর তারা ওই ভবন ছেড়ে দিয়ে অন্য কার্যালয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, “কার্যালয় ছেড়ে দিব, তবে ছয় মাস পর। কারণ চুক্তি অনুযায়ী সেটাই আছে।

“ঢাকা শহরের যে কোনো বাসা-বাড়ির ছয় মাস চুক্তি থাকে। আমাদের সঙ্গেও ছয় মাসের চুক্তি হয়েছে। সুতরাং পুলিশ বাহিনী দিয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে দিলেও আমারা ছয় মাসের আগে কার্যালয় ছাড়ব না।“

চুক্তিতে ছয় মাসের কথা যেমন লেখা আছে, তেমনি ১০ তারিখের মধ্যে ভাড়া পরিশোধের কথাও লেখা আছে। ভাড়া না দিলে ছয় মাসের শর্ত থাকে কি না- এই প্রশ্নে নুর বলেন, “তিনি (মশিউজ্জামান) আমাদের দলে থাকার সময়ে এই কার্যালয়টি অনুদান হিসেবে দিয়েছিলেন। এখন তিনি দল করবেন না। চুক্তি অনুযায়ী মাসিক ভাড়া নেবেন।”

গণঅধিকার পরিষদ আর কক্ষ ভাড়া না করে নিজস্ব কার্যালয় কিনবে জানিয়ে নুর বলেন, “ইতোমধ্যে সারা দেশ থেকে অনুদান হিসেবে কয়েক লাখ টাকা গণপরিষদের নিজস্ব কার্যালয়ের জন্য জমা হয়েছে। আরও দেওয়ার জন্য অনেকে কথা দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews