খান মেহেদী :- সরকারের দেওয়া সহজলভ্য ইন্টারনেট দিয়েই বিএনপি ডিজিটাল অপপ্রচারে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে ইন্টারনেটকে সর্বজনীন সহজলভ্য করেছে, আর বিএনপি সেই সুবিধা নিয়ে ‘পেইড এজেন্ট’ দিয়ে ডিজিটাল অপপ্রচার অপরাধ সংঘটিত করছে, যা কখনোই সমীচীন নয়।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে পরিচিতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল রোববার বিএনপির মহাসচিবের ‘ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ এবং শাটডাউন করে বিরোধী দলকে দমনের চেষ্টা এবং জনগণের অধিকার হরণ করা হচ্ছে’ এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাব পেছনে ফিরে তাকাতে। ওনাদের আমলে দেশে সর্বসাকল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করত ৫০ লাখ মানুষ। এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ১৩ কোটি মানুষ। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান দিয়ে আমাদের সরকারই ইন্টারনেটকে সহজলভ্য করেছে, সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করি না; বরং এই সহজলভ্যতার সুযোগ গ্রহণ করে বিএনপি তাদের “পেইড এজেন্ট”দের দিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার এবং মন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারদলীয় নেতাদের চরিত্র হনন করে, অপপ্রচার চালায়, গুজব ছড়ায়। তাদের পেইড এজেন্ট নিয়োগ ইতিমধ্যেই প্রমাণিত, কয়েকজনের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে, যেমন কেউ কেউ আক্ষেপ প্রকাশ করেছে—যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তা দেয় নাই, সে জন্য সে আপাতত বেশি কিছু করছে না। এ রকম পেইড এজেন্টদের সঙ্গে তারেক রহমান যে নিয়মিত বৈঠক করে, তার ছবিও আমাদের কাছে আছে এবং সরকার ইন্টারনেট সহজলভ্য করার পরিপ্রেক্ষিতেই তাদের পক্ষে এসব করা সম্ভব হয়েছে, যেটি কখনো সমীচীন নয়, সেগুলো ডিজিটাল অপরাধ।’
সারা পৃথিবীতে এই ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নানা আইন আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাম্প্রতিক সময়ে একটি আইন পাস করেছে, সেখানে প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট দেশে রেজিস্টার্ড হতে হবে। ভারতেও সে আইন পাস হয়েছে। আমরা এখনো সে আইন পাস করিনি, তাদের এখানে রেজিস্ট্রেশনের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে সময়ে সময়ে বন্ধ করা হয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে কখনো সেটি করা হয়নি। মির্জা ফখরুল সাহেব এ রকম আজগুবি কথা কোথায় পেলেন! উনি আসলে ডিজিটাল অপরাধীদের পক্ষে, তাদের যে পেইড এজেন্টরা আছে, তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য রোববার সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বিএনপি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে, সে জন্য তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে—দলটির নেতাদের এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা চাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক।
একদিকে মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন নির্বাচনে যাবেন না, আবার বলেন যে তাদেরকে সরকার নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে। আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাই না। আমরা চাই সংবিধান মেনে, সংবিধানের আলোকে যে নির্বাচন হবে, বিএনপি সেই নির্বাচনে আসুক।
Leave a Reply