1. [email protected] : admins :
  2. [email protected] : Kanon Badsha : Kanon Badsha
  3. [email protected] : Nayeem Sajal : Nayeem Sajal
  4. [email protected] : News Editir : News Editir
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ঈদুল আজহারে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে রোশান-বুবলী’র ‘রিভেঞ্জ’ ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক মুখঃ নতুন মুখ সিফাতুল ইসলাম প্রান্ত এবার সিনেপ্লেক্স থেকে সিনেমা সরিয়ে নিলেন ইকবাল ডিএমপি ওয়ারী থানায় আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত আতরবিবি হওয়া সহজ ছিল না : ফারজানা সুমি ঘুরতে কিনবা কাজে নোয়াখালী গেলে থাকবেন কোথায় জেনে নিন মোস্তফা কামাল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্লাড এন্ড হার্ট এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত বনার্ঢ্য আয়োজনে আইফিক্সফাস্ট এর ২য় ধাপের সার্টিফিকেট বিতরন কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতব মুদ্রার অবৈধ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার: ৭ গাছ লাগিয়ে-খাবার স্যালাইন বিতরণ করে জন্মদিন পালন করলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অশ্রু ভূইয়া

ট্রাক ভর্তি লাশ, কান্নায় ভারি ঢাকা মেডিকেল

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বোন কাসফিয়াকে অনেকক্ষণ ধরেই খুঁজছিলেন এক নারী। কাসফিয়া তার তিন সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতের আগুনের পর তাদের কারো খোঁজ নেই, ফোনও বন্ধ।

গণমাধ্যমে সেই ভবনে আগুনের কথা জানান পর মনের কোণে আশঙ্কা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটোছুটি করছিলেন সেই নারী।

সেখানে আরো বহু মানুষ একইভাবে তাদের স্বজনদের খোঁজে ঘুরছিলেন। তারা হাসপাতালের ফটকে এসে জিজ্ঞেস করছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের। তারা যখনই মর্গ দেখিয়ে দিচ্ছেন, কান্নায় ভেঙে পড়ছেন একেক জন।

বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসের রাতটিতে হঠাৎ করেই বীভৎস হয়ে উঠে। রাত ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে।

ঘণ্টা দুয়েক ধরে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান চলার সময় ঘুণাক্ষরেও মানুষ বুঝতে পারেনি কত বড় দুঃসংবাদ অপেক্ষা করেছিল তাদের জন্য।

নীচ তলায় আগুনের কারণে সরাসরি ভবনটিতে ঢোকার সুযোগ ছিল না। যারা ভবনটির ছাদে অবস্থান নিয়েছিল, তাদেরকে মইয়ে করে নামিয়ে আনা হয়। আগুন নেভানোর আগে আগে জানানো হয় ৭৫ জনকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।

আট তলা এই ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোরে ছিল খাবারের দোকান, যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম কাচ্চি ভাই। একটি ফ্লোরে ছিল কাপড়ের দোকান, একটি কোণে ছিল মোবাইল ফোন ও অ্যাকসেসোরিজের দোকান।

রাত পৌনে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে থাকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স। সেগুলোতে থাকা মানুষের দেহের বেশিরভাগই নিথর।

দেহগুলোকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেলের ৭ নম্বর অবজারভেশন ওয়ার্ডে। সেখান থেকে পাঠানো হতে থাকে মর্গে।

হাসপাতাল জুড়ে স্বজনদের কান্না, ভিড় সামলাতে বাঁশির শব্দ আর মাঝে মাঝে আসতে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ।

একেকটা অ্যাম্বুলেন্স আসার পর শুরু হচ্ছে হাসপাতাল কর্মীদের ছোটাছুটি। ‘সরেন সরেন’, ‘রাস্তায় কেউ দাঁড়াবেন না’, এমন কথা বলতে বলতে সমানে দৌড়াদৌড়ি করে চলেছেন হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসারেরা। প্রস্তুতি আরও অ্যাম্বুলেন্সর।

কাঁদতে কাঁদতে বন্ধুদের কাছে ভর দিয়ে হাসপাতালে ঢুকছিলেন এক তরুণ। ঢোকার মুখেই আর এক বন্ধুর কাছে শুনলেন প্রিয়জনটি শুয়ে আছে মর্গে। সেটি শুনে মেঝেতেই লুটিয়ে কাঁদতে শুরু করলেন তিনি।

অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনে জাগে ভয়

রাত একটার আগেই সাইরেন বাজিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স আসছিল ঢাকা মেডিকেল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে।

সেসব অ্যাম্বুলেন্সকে ঘিরে মানুষরা ভিড় করছিলেন, জিজ্ঞেস করছিলেন ‘বাইচা আছে না লাশ’?

উদ্ধারকর্মীদের মুখে কোন জবাব নেই।নিথর দেহগুলো তুলে ‘ঘর ঘ’র শব্দে ট্রলিগুলো নিয়ে চলে যান হাসপাতালের ভেতরে জরুরি বিভাগের মর্গে।

তবু স্বজনরা আশায় থাকেন, এই বুঝি অন্তত আহত অবস্থায় পাওয়া যাবে তাদের প্রিয় স্বজনকে।

এর মধ্যে রাত একটা ২৪ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল প্রাঙ্গণে আসে বিরাট এক কাভার্ড ভ্যান। ফায়ার সার্ভিসের এই রেফ্রিজারেটর স্টোরেজ ট্রাকটি দেখে স্বজনদের আর বুঝতে বাকি থাকে না এর ভেতরে রয়েছে কেবলই লাশ। ট্রাক থেকে নামানো হয় একে একে দশটি মরদেহ। শুরু হয় উচ্চশব্দে কান্না। ট্রাকের ভেতরের মানুষরা যাদের কাছের মানুষ নন, তাদেরকেও চোখ মুছতে দেখা গেল।

মৃতের সংখ্যা বাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে

শুরুতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনাস্থল থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে ৪২ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহবাগ থানার এস আই মহিদুল ইসলাম জানান, রাত একটা পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেলে আসা ১১ জনের লাশ গুনেছেন। নিহত ব্যক্তিদের ছবি তুলে রাখছেন তিনি। ঘটনাস্থলে আরো কতজন আছে তারা তারা এখনো জানেন না।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুহিত উদ্দিন একই সময়ে বলেন, বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এখনো সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

রাত সোয়া একটার দিকে পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বেইলি রোডে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ৪২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের বিষয়ে শঙ্কিত। তাদের চিকিৎসা ও জীবন রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

পরে রাত ১ টা ৫৫ মিনিটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান। এর মধ্যে ১০ জন মারা যান শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে, ঢাকা মেডিকেলে মারা যান ৩৩ জন।

মন্ত্রী আরো জানান, এখনো ২২ জনকে নিয়ে তারা শঙ্কায়। তাদের সবার কণ্ঠনালী পুড়ে গেছে।

রাত আড়াইটার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আইজিপি সাংবাদিকদেরকে বলেন, আমি পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে একজনকে মৃত দেখে এসেছি। সব মিলিয়ে ৪৪ জনের মৃত্যুর তথ্য আছে।

সিলিন্ডারে ঠাসা গ্রিন কোজি কটেজে

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়া জেনারেল মঈন উদ্দিন বলেছেন, ভবনটিতে চুলা থেকে বা গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরেই গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রাত সোয়া ১টার দিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে সাংবাদিকদেরকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, আমার ধারণা চুলা থেকে অথবা গ্যাস লিক থেকে আগুন হতে পারে।

দ্বিতীয় তলা ছাড়া প্রতিটি তলাতে এমনকি সিঁড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল। এজন্য এটা বিপজ্জনক।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, এই ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে সিঁড়িতে ৩৫ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল, এখানে সিলিন্ডার রাখার কোনো সুযোগ নেই।

এই ভবনে কেবল একটি সিঁড়ি ছিল বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের প্রধান।

পরে এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে।

কমিটিতে সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইনস্পেকটরকে রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 Somoyexpress.News
Theme Customized By BreakingNews