এম এ আউয়াল : নোয়াখালীর সেনবাগের সেবারহাট বাজারে নারী ও বৈশাখী মেলার বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৫/২০ জনের কিশোরগ্যাং সদস্যরা উপুর্যুপুরি কুপিয়ে শাওন (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করেছে।এ সময় সংঘবদ্ধ কিশোরগ্যাং সদস্যদের ছুরিকাঘাতে দু’ গ্রুপের আরো ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
বুধবার রাত ৮টার দিকে সেবারহাট বাজারের ফুডগার্ডেনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। স্হানীয় লোকজন জানায়, শাওন তার চার বন্ধুকে নিয়ে বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে ফুড গার্ডেনের সামনে আসা মাত্রই কিশোরগ্যাং প্রধান হৃদয়ের নেতৃত্বে ১৫/২০জনের একদল কিশোরগ্যাং অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শাওন,পিয়াস ও মেহেদীকে উপর্যুপুরী কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায় । এ সময় স্হানীয়রা শাওনকে উদ্ধার করে দাঁগনভূঞা সরকারী হাসপাতালে ও পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। সেনবাগ থানা পুলিশ নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করে।
নিহত মাজহারুল ইসলাম শাওন (১৮) দাগনভূঞা ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজের একাদশ ২য় বর্ষের ছাত্র ও উত্তর রাজারামপুর জমাদার বাড়ীর জসিম উদ্দিন কচির ৩য় পুত্র।নিহত শাওনের পিতা ও অপর দুই ভাই আবুধাবি এবং সৌদি আরব প্রবাসী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত শাওনের যানাজা শেষে নিজ কবরস্হানে দাফন সম্পন্ন হয়।যানাজায় সহস্রাধিক লোকজন অংশ নেয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে নিহত কলেজ ছাত্র শাওনের মা আন্জুমান আরা বার বার মুর্চ্ছা যান। খবর পেয়ে স্বজন সহ এলাকার শত শত নারী পুরুষ ওই বাড়ীতে ভীড় করেন।কলেজ ছাত্র শাওন খুনের ঘটনায় পরিবার পরিজন সহ এলাকায় শোকের মাতম চলছে ।
ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত শাওনের মরদেহ নিজ বাড়ীতে আনা হলে তার মা সহ স্বজদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
বিকেলে সরেজমিন ওই বাড়ীতে গেলে নিহতের মা আন্জুমান আরা তার সন্তান হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে প্রলাপ বকছেন এবং বার বার মুর্চ্ছা যান।
সেনবাগ থানার ওসি মো: নাজিম উদ্দিন সময় এক্সপ্রেস নিউজ কে বলেন,নিহতের পিতা ও দুই ভাই প্রবাসে থাকায় এখনো মামলা হয়নি। তবে হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে সনাক্ত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িত খুনীদের গ্রেফতার করা হবে।
স্হানীয় মাসুদ মেম্বার সময় এক্সপ্রেস নিউজ কে বলেন,শাওন হত্যায় জড়িত সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চিহ্নিত কিশোরগ্যাং সদস্যদের অভিলম্বে গ্রেফতার সহ শাস্তির দাবী জানিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্হানীয় লোকজন জানায়,সশস্ত্র কিশোরগ্যাং সদস্যদের সাথে একটি নারী ও অবৈধভাবে একদিনের বৈশাখী মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।সেবারহাট সহ আশপাশের এলাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় একাধিক কিশোরগ্যাং বিভিন্ন স্হানে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইভটিজিং, চাঁদাবাজি,মাদক সহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে ।সেনবাগ শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক একটি গ্যাংয়ের গ্রুপের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। এলাকা ভিত্তিক বড় ভাইদের ডাক পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ৪০/৫০ টি হোন্ডা বহর নিয়ে গ্যাং এর সদস্যরা অস্ত্র উচিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের উপর ।
এ দিকে শাওন হত্যার পর পুলিশ অবৈধ মেলাটি বন্ধ করে দিয়েছে।
বর্তমানে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল সহ বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করেছে।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply