নাঈম সজল: ছিলোনিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, সেনবাগ তথা নোয়াখালীর প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে একটি। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আপ্রান চেষ্টায় বিদ্যালয়টি একটি সন্মানজনক অবস্থানে আসে। বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম এবিএম আব্দুল হালিমের দায়িত্ব থাকা কালীন বিদ্যালয়টি তার সর্বোচ্চ সন্মান বজার রাখতে সক্ষম ছিলো। এবিএম আব্দুল হালিম স্যারের পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বিএসসি। তিনিও তার সর্বোচ্চটা দিয়ে বিদ্যালয়ের অর্জিত সুনাম রক্ষার জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়েছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু তার এই আপ্রান চেষ্টার মাঝে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের কিছু মানুষ। বিদ্যালয়ের নানান কর্মকাণ্ডে এসব অযোগ্য অভিভাবক প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ, বিদ্যালয়ের ছাত্রদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া, পুরাতন শিক্ষদের বদলী/অবসর, যথাযথ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া, বর্তমান শিক্ষকদের মধ্যে টিউশনির মনোভাব ও ক্লাসে মনোযোগের অনিহায় ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে সামাজিক অবক্ষয়ের কারনে আজ বিদ্যালয়টি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
বিদ্যালয়টি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে, টপ স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হারুনের মত মেধাবী ও সফল মানুষেরা। একটা বিদ্যালয়কে বলা হয় মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান। যে বিদ্যালয় সেনবাগের প্রথম সারির একটা বিদ্যালয় ছিলো অথচ আজ সেই বিদ্যালয় এর ফলাফল দেখলে কোন মানুষ ক্ষোভ না প্রকাশ করে থাকতে পারেন না। এই ব্যার্থতার দায়বার যেমন শিক্ষকদের নিতে হবে, তেমনি নিতে হবে অভিভাবকদের ও, আর অভিভাবক প্রতিনিধির নামে যারা টেষ্ট পরিক্ষায় ৭/৮ বিষয়ে ফেইল করা শিক্ষার্থীদেরকে ফরম ফিলাপ এর জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন তাদেরকে ভয়কট ও তারা যেনো এসব বিষয়ে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ না করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়াটাও সময়ের দাবি। এক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
আর এতোটুকু বাচ্চাদেরকে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত করেছেন তাদেরকেও ভয়কট করে শিক্ষার্থীদেরকে পড়ালেখায় মনোযোগী করে তুলতে হবে।
এই বিষয়গুলো যদি এখন থেকেই তদারকি না করা হয় তাহলে বিদ্যালয়ের ফলাফল আরো জঘন্য হতে বেশিদিন দেরি করতে হবেনা।
আজকের ফলাফল বিশ্লেষণ করে যা বুঝতে পারলাম ফেইল করা বেশিরভাগই ছাত্রী যারা মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা নির্বাচনী পরিক্ষায় ৬/৭ বিষয় ফেইল করার কারনে তাদেরকে এস এস সি ফরম পূরণ করতে না দেওয়ার স্বীদ্ধান্ত নেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কিন্তু অভিভাবকরা তাদের মেয়েদেরকে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর জন্য অভিভাবক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে অনেকটা জোর করেই ফরম পূরন করাতে বাধ্য করান শিক্ষকদের। যার ফলে আজকেই এই ফলাফল বিপর্যয়। অবশ্য এই বিষয়ে অভিবাবক প্রতিনিধিদের এই বিষয়ে ধারনা থাকার ও কথা নয় কারন তাদের বেশিরভাগই প্রাথমিকের গন্ডি পার হয়ে মাধ্যমিকে আসেই নি, তারা কিভাবে বুঝবে তাদের এই খামখেয়ালিপনার পরিনাম কি হতে পারে।
নাঈম সজল
সময় এক্সপ্রেস নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Leave a Reply