নিজস্ব সংবাদদাতা:- বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের পৌর এলাকার চৌমাথা নামক স্থানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক ‘মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য’ অবহেলা আর অযত্নে নষ্ট হতে চলেছে। পৌর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পৌর সুপার মার্কেট এর সামনে ভাস্কর্যটির অবস্থান।
বুধবার (১২ জুলাই) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভাস্কর্যটির বেহাল অবস্থা। কিন্তু এই স্মৃতি চিহ্নটুকু ধরে রাখার যেন উদ্যোগ নেই প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের। চোখের সামনে অবহেলায় পড়ে রয়েছে ভাস্কর্যটি। এই স্মৃতি ভাস্কর্যটির সামনে গেলে বোঝা যায় কতটা অবহেলা আর অযত্নে ভাস্কর্যটি বিলীন হওয়ার পথে। অনেকদিন ধরে সংস্কার না করায় ভাঙন ধরেছে ভাস্কর্যটিতে। ভেঙে পড়ছে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান অস্ত্র বন্দুকের বিভিন্ন অংশ। স্থানীয় দোকানদাররা ভাস্কর্যের বন্দুকের সাথে বৈদ্যুতিক তার বেঁধে নিয়েছেন। যেকোনো সময় ঝড় বাতাসে বৈদ্যুতিক তারের চাপে বন্দুকটির বাকি অংশ ভেঙে পড়তে পারে। অবহেলা আর অযত্নে থাকা ভাস্কর্যটি দীর্ঘ দিনেও সংস্কার হয়নি লাগেনি একফোঁটা রঙের আঁচর। অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া লাল-সবুজের রং যেন ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে ভাস্কর্যটি থেকে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি ভাস্কর্যটি সারাবছরই অযত্নে-অবহেলায় আর নোংরা হয়ে পড়ে থাকে। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় ভাস্কর্যটি স্থানীয় কিছু লোকজন অবৈধ দোকানপাট নির্মাণ করে দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভাস্কর্য ঘেঁষে কয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছে। দোকানে আসা প্রতিদিনের কাস্টমাররা জুতা পায়ে ভাস্কর্যের উপর অবস্থান করে। কয়েকজন দোকানদারেরা ভাস্কর্যটির উপরে টুল বসিয়ে দোকানদারি করছেন এ কারণে ভেঙে গেছে ভাস্কর্যটির নিচের অংশ।
নোংরা পরিবেশ আর ময়লার কারণেই কারো চোখ পড়ছে না মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নের দিকে। ভাস্কর্যটির অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আর কিছুদিন পড়ে এই স্মৃতি চিহ্নটুকু আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহকারি কমান্ডার মো: রবুল হক হাওলাদার সহ সুশীল সমাজের দাবি অনতিবিলম্বে ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হোক।
বাকেরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া বলেন, বাকেরগঞ্জে এটাই প্রথম মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক ‘মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য’ জেলা পরিষদ থেকে নির্মাণ করা হয়। ভাস্কর্য দেখেও যাহারা তার উপরে বসেন তাদের সাধারণ জ্ঞানের অভাব রয়েছে। নতুন পরিকল্পনার মাধ্যমে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ সহ ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক ‘মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য’ বিষয়টি আমার জানা ছিল না, এই প্রথম সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম। সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ভাস্কর্যটি সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হবে।
News Editor
Leave a Reply